চার জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৫ জনের

বজ্রপাত
ফাইল ছবি

বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও যশোরের চৌগাছায় দুজন কৃষক, পাবনার দুই উপজেলা সুজানগরের আহম্মেদপুর ও আটঘরিয়ায় কলেজছাত্রসহ দুজন এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় এক গৃহবধূ বজ্রপাতে মারা গেছেন। শনিবার দুপুর, বিকেল ও সন্ধ্যায় পৃথক এসব ঘটনা ঘটে।

পাবনা: বিকেলে সুজানগরের আহম্মেদপুরে ও আটঘরিয়ার একদন্ত ইউনিয়নের বাড়ইপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়।

তাঁরা হলেন একদন্ত ইউনিয়নের বাড়ইপাড়া গ্রামের আবদুল মজিদ প্রামাণিকের ছেলে এনামুল হক (২২)। তিনি পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অপরজন মনিরুজ্জামান (৪৫) আহম্মেদপুরের চরগোবিন্দপুর গ্রামের আকবর প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন।

আরও পড়ুন

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এর মধ্যে এনামুল বাড়ির পাশের মাঠে ঘাস কাটতে যান। হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। অপর দিকে মনিরুজ্জামান বাড়ির পাশের গাজনার বিলে ঘাস কেটে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়।

আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন এবং আমিনপুর থানার ওসি আনিসুর রহমান ঘটনা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দুটি পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন এই দুই কর্মকর্তা।

বগুড়া: নন্দীগ্রাম উপজেলায় মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে লোকমান আলী (৬৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার বিকেলে বুড়ইল ইউনিয়নের সিংজানি ময়নাখা গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। কৃষক লোকমান সিংজানি ময়নাখা গ্রামের মৃত জিলহজ্বের ছেলে।

স্থানীয় ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নন্দীগ্রাম উপজেলায় শনিবার বিকেল থেকেই ঝোড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটছিলেন লোকমান আলী। একপর্যায়ে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে পরিবারের লোকজন লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নেন।

যশোর: চৌগাছা উপজেলার তেঘরী গ্রামের একটি মাঠে শনিবার সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে বছির উদ্দিন (৫০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি চৌগাছা উপজেলার তেঘরী গ্রামের মোহাম্মাদ আলীর ছেলে।

স্থানীয় ব্যক্তি ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মাঠে ধান কাটা ও গোছানোর কাজ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন বছির উদ্দিন। এ সময় বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে বছির উদ্দিনের ওপর বজ্রপাত হয়। কিছুক্ষণ পর মাঠ থেকে আরেক ব্যক্তি বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন। উদ্ধার করে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

পিরোজপুর: মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগর গ্রামে বৃষ্টির মধ্যে মাঠে গরু আনতে গিয়ে হোসনে আরা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে উপজেলা এ ঘটনা ঘটে। হোসনে আরা বেগম ওই গ্রামে সৌদিপ্রবাসী আবদুস সালাম খলিফার স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী।

উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মিরাজ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে হোসনে আরা বেগম বাড়ির কাছে মাঠে গরু আনার জন্য যান। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খুঁজতে গিয়ে তাঁকে মাঠের মধ্যে মৃত অবস্থায় পান।

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া; যশোর অফিস এবং প্রতিনিধি, পাবনাপিরোজপুর]