বেনাপোলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর নৌকার কর্মীদের হামলা, বন্দরের কার্যক্রম এক ঘণ্টা বন্ধ
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ও তাঁর লোকজনের ওপর হামলা করার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় আশরাফুল আলমসহ ১০ কর্মী আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের ১ ও ২ নম্বর ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার সময় বেনাপোল বন্দরে পণ্য ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সতর্ক অবস্থানের কারণে বেলা ১১টার দিকে বন্দরের কার্যক্রম আবার শুরু হয়।
ঘটনার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে নৌকা প্রতীকের সমর্থক বন্দরের ৩ শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। জরিমানা করা শ্রমিকেরা হলেন শার্শার রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা রশিদ মল্লিক, ছোট আঁচড়া গ্রামের রাজু সরদার ও বাবু সরদার। তাঁরা বন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, ‘আশরাফুল আলমের ওপর হামলার সঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বা আওয়ামী লীগের কোনো লোকজনের সম্পৃক্ততা নেই। আমি শুনেছি, বন্দরের ভেতরে শ্রমিকদের সঙ্গে আশরাফুলের কথা–কাটাকাটি হয়েছে। সেখানে শ্রমিকেরা তাঁকে ধাক্কা বা মারধরও করতে পারেন। এর সঙ্গে আমাদের কোনো কর্মীর সম্পৃক্ততা নেই।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম বলেন, ‘প্রার্থীর ওপরে হামলা হলো। আমিসহ ১০-১৫ জন কর্মী রক্তাক্ত জখম হলাম। সেখানে হামলাকারীদের কারাদণ্ড না দিয়ে জরিমানা করা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত দায় সারলেন। আমি মনে করি, জরিমানার চেয়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া জরুরি ছিল। এ বিষয়ে মামলা করতে গেলে বন্দর থানার ওসি মামলা গ্রহণ করেননি। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’
জানতে চাইলে বেনাপোল বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিধান রয়েছে। শার্শা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে হামলার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে বন্দরের ৩ শ্রমিকের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা হওয়ার সুযোগ নেই। এরপরও কারও কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিতভাবে জানালে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম তাঁর কর্মী–সমর্থকদের নিয়ে বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে গণসংযোগ করে বন্দরের ১ ও ২ নম্বর ফটক এলাকায় পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় শ্রমিকদের একটি পক্ষ হামলা করে। এ সময় আশরাফুল ও তাঁর সঙ্গে থাকা অন্তত ১০ কর্মীকে পিটিয়ে জখম করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আশরাফুলকে উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
আশরাফুল আলম বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আফিল উদ্দিনের লোকজন আমার ও আমার কর্মীদের ওপরে হামলা করেছে। প্রতিনিয়ত তারা আমার কর্মীদের হুমকি–ধমকি দিচ্ছে। শিকারপুর ও লক্ষণপুর ইউনিয়নে আমার নির্বাচনী অফিস করতে দেওয়া হয়নি। আমরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ভোটের মাঠে রয়েছি।’