যে কারণে নিঝুম দ্বীপের পুকুরে বারবার ইলিশ মিলছে
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের পুকুরে প্রায়ই মিলছে ইলিশ। গতকাল বুধবারও উপজেলার একটি পুকুরে ১০ কেজি ইলিশ মিলেছে। এ নিয়ে দ্বীপের মানুষজনের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। জোয়ারের পানির সঙ্গে দ্বীপের পুকুরগুলোতে ইলিশ ঢুকে পড়েছে।
নামে ইলিশ হলেও পুকুরে ঢুকে পড়া এসব ইলিশের স্বাদ তেমন নেই। জেলে এবং মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, আবদ্ধ মিঠা পানিতে বড় হওয়ায় এসব ইলিশের গুণাগুণ কমে গেছে। স্বাদও তেমন নেই।
গতকাল বুধবার সকালের দিকে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুগান্তর কিল্লা এলাকার একটি পুকুরে জাল ফেলে প্রায় ১০ কেজি ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। তবে এর আগে গত বছরও নিঝুম দ্বীপের পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গিয়েছিল। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ উচ্ছ্বাস বিরাজ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিন আগে যুগান্তর কিল্লা গুচ্ছগ্রামের একটি পুকুর সেচ দেওয়া শুরু করেন ইজারাদার আবদুল মান্নান। পানি কমে এলে বুধবার সকালের দিকে তিনি জালের সাহায্যে মাছ ধরা শুরু করেন। জেলেরা জাল ফেলে পরবর্তীতে টেনে উপরে তুলতেই তাদের চোখ বেশ বড় বড় হয়ে যায়। জালে বেশ কয়েকটি ইলিশ মাছ। এর আগেও এই পুকুরে ইলিশ পেয়েছিলেন তিনি। তবে পরপর এভাবে ইলিশ মিলবে ভাবেননি। জালে ধরা পড়া একেকটি মাছের ওজন প্রায় ৫০০-৬০০ গ্রাম। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কেজির মতো মাছ পাওয়া গেছে বলে জানান ইজারাদার।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার প্রথম আলোকে বলেন, অধিক জোয়ারের সময় নিঝুম দ্বীপের বেশির ভাগ অংশই প্লাবিত হয়। এতে দ্বীপের পুকুর, ডোবা, মাছের খামারসহ সব কিছু ভেসে যায়। ওই সময় নদী থেকে ইলিশ মাছ পুকুরে ঢুকতে পারে। আবদুল মান্নান নামের ওই ব্যক্তি গত বছরও তাঁর পুকুরে ইলিশ মাছ পেয়েছিলেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিঝুম দ্বীপের পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। নতুনও নয়। সেখানকার পুকুরগুলো যেহেতু জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়, সেহেতু জোয়ারের পানির সঙ্গে ইলিশ পুকুরে ঢুকে পড়ে এবং কিছু কিছু ইলিশ পরবর্তীতে পুকুরে আটকা পড়তে পারে। তবে এসব ইলিশগুলো দীর্ঘদিন ধরে মিঠা পানিতে আটকা থাকার কারণে দেখতে ইলিশের মতো হলেও ইলিশের গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে।