জার্মানিতে রপ্তানি হলো রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম
রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম ইতিমধ্যে রপ্তানি শুরু হয়েছে। ঢাকার গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার কাওসার আহমেদ প্রাথমিক পর্যায়ে ২০০ কেজি হাঁড়িভাঙা আম জার্মানিতে পাঠিয়েছেন। মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জের মো. খলিলুর রহমানের বাগান থেকে ২৪ জুন এই আম সরবরাহ করা হয়।
মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন রপ্তানির বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেড বিভিন্ন জাতের আম রপ্তানি করে আসছে। এ বছর এর মাধ্যমে প্রথম এই আম বিদেশের রপ্তানি শুরু করা হলো। এ ছাড়া নেপাল, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডেও হাঁড়িভাঙা আম রপ্তানি হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রকল্প নিয়েছে। বিভিন্ন বাগানমালিককে উৎকৃষ্ট আম উৎপাদনে এই প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি সার ও কীটনাশক সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে আমবাগানে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। আনুমানিক পাঁচ একর বাগানের আম বিদেশে রপ্তানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২১ জুন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পদাগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে জিআই পণ্য হাঁড়িভাঙা আমের মেলা ও প্রদর্শনী হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। সেখানে তিনি হাঁড়িভাঙা আম রপ্তানির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। মূলত মন্ত্রীর আগ্রহে ঢাকার গ্রিন গ্লোবাল অ্যাগ্রো লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার কাওসার আহমেদ নমুনা হিসেবে ইতিমধ্যে ২০০ কেজি হাঁড়িভাঙা আম জার্মানিতে পাঠিয়েছেন।
আমচাষি খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার বাগানের আম মূলত বিদেশে রপ্তানির জন্য। নিজে পরিচর্যা করার পাশাপাশি কৃষি অফিসের পক্ষ থেকেও সব সময় খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পক্ষ থেকে চাষিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। আমার মতো অনেকের বাগান রাখা হয়েছে বিদেশে রপ্তানির জন্য।’
রংপুরে প্রতিবছর জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাজারে পাওয়া যায় হাঁড়িভাঙা আম। এই আম আঁশবিহীন, আঁটিও খুব ছোট। প্রতিটি আমের ওজন হয় ২০০-৩০০ গ্রাম। বড় আকারের এক মণ (তিনটিতে এক কেজি) আম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়। মাঝারি আকারের আম ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা। আর ছোট এক মণ আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর উপজেলার বিস্তৃত এলাকার ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে এই আম।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, চলতি বছর জেলায় ৩ হাজার ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙার আবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন।