চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ তাপমাত্রা অনেকটা কমে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা চুয়াডাঙ্গায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস; যা এ বছরের মধ্যে জেলায় সর্বনিম্ন। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা এতটা কমে যাওয়া বেশ অস্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এর আগে গতকাল বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাংলা দিনপঞ্জি অনুযায়ী আজ পৌষ মাসের ১৪ তারিখ। মাঘ মাস আসতে এখনো ১৬ দিন বাকি। সাধারণত মাঘ মাসে শীতের তীব্রতা বাড়ে। কিন্তু মধ্য পৌষেই হঠাৎ করে তাপমাত্রা এত কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মানুষ।
চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, চলতি মৌসুমে এটিই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি বলেন, ‘আমার ১৮ বছরের চাকরি জীবনে এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা এত কমে যাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।’
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ছিল ওই দিন সারা দেশেরও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এরপর ১৮ ডিসেম্বর থেকে গতকাল ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১ দিনে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছিল। হঠাৎ করেই আজ তাপমাত্রা এত নিচে নেমে যায়।
তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি উত্তর থেকে আসা হিমেল হাওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। আজ সকাল সাতটার দিকে পৌর এলাকার হাজরাহাটি এলাকার ভুট্টাখেতে কাজ করা কৃষি শ্রমিক মোহাম্মদ জিকু মল্লিক বলেন, ‘য্যারাম জাড় লাগজে। ঘরে ট্যাকা থাকলি এত কষ্টের মদ্দি বের হতাম না।’
শহরের শহীদ হাসান চত্বরে ভ্যানচালক আজিজুল সরদার বলেন, ‘একদিকি জাড়, আরাকদিকি কুয়ো। খুপ কষ্ট করেই সকালে ভ্যান নিয়ে বের হয়চি। মনডা বলচে ঘরে শুয়ে থাকি। পেটে খিদে থাকলি কী আর শুয়ে থাকা যায়?’
শীতের তীব্রতা থেকে দরিদ্র মানুষকে রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি উদ্যোগ জেলায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার ১০০টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ হাজার কম্বলের চাহিদা জানিয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। দেবী ফাউন্ডেশন, আকাঙ্ক্ষা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা এবং পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি-পুনাকের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।