নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা ও কাদেরের বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা

শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জ সদর ও রূপগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এক বাসচালক ও একজন স্কুলছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিহত বাসচালক আবুল হোসেনের মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি এবং রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকায় স্কুলছাত্র রোমান মিয়া নিহতের ঘটনায় তার খালা বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অপর একটি হত্যা মামলা করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে বাসচালক ও স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার সাইনবোর্ড এলাকায় বাসচালক আবুল হোসেন (৩২) গুলিতে মারা যাওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত আবুল হোসেন শহরের আমহাট্টা জল্লারপাড় এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুলাই বেলা একটার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পণ্ড করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সমর্থিত নেতা-কর্মীরা এক জোট হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, শটগান, ককটেল, লাঠিসোঁটাসহ নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন দমন করতে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় শামীম ওসমানের নির্দেশে আসামিরা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময়  ওই স্থান অতিক্রম করার সময় শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমান অস্ত্র দিয়ে গুলি করলে তাঁর ছেলে আবুল হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাতটার দিকে রূপগঞ্জ চনপাড়া এলাকায় শেখ হাসিনার পতনের পর আনন্দমিছিলকারী ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি ও আক্রমণ চালানো হয়। এ সময় স্কুলছাত্র রোমানের বুকে ও গলায় গুলি করে আসামিরা। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) ও তাঁর ছেলে গোলাম মর্তুজাসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬০ জন দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।