বিএনপি-জামায়াত মাটিতে শুয়ে পড়ে গিয়ে বলেছে, আমরা পড়িনি: মেনন
বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘১৯৭৩ সাল থেকে আমি নির্বাচন করছি। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, উজিরপুর-বানারীপাড়ার নির্বাচন উৎসবমুখর হয়েছে। নির্বাচনে কিছু উত্তেজনা থাকবেই। নির্বাচনে খুনোখুনির পর্যায়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। বিএনপি-জামায়াত মাটিতে শুয়ে পড়ে গিয়ে বলেছে, আমরা পড়িনি। তারা জনগণের কাছে পরাজিত হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাবের হলরুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে রাশেদ খান মেনন এ কথা বলেন। মেনন এ সময় আরও বলেন, ‘নির্বাচনে সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে অংশগ্রহণ করেছে। প্রশাসন বেশি নিরপেক্ষতা দেখাতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে ভোটারদের নিরুৎসাহিত করেছে। যাঁরা ভোট নিচ্ছিলেন, তাঁদের অনেককে আমি প্রশ্ন করেছি, আপনারা লোকজনকে ভোট দিতে দিচ্ছেন না কেন? তাঁরা উত্তরে বলেছেন, ছবির সঙ্গে ভোটারের চেহারা মিলছে না। ২০ বছর আগের ছবির সঙ্গে এখনকার চেহারার মিল নাই থাকতে পারে, কিন্তু সেটিও তাঁরা খতিয়ে দেখেছেন।’
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য মতবিনিময় সভায় আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে একটা সফল নির্বাচন আমরা অনুষ্ঠিত করতে পেরেছি। যদিও এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। চ্যালেঞ্জ ফ্রম দ্য আউটসাইড (বহির্বিশ্ব), যেটা প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন। আমি বহু আগে বলেছি তাদের (পশ্চিমাদের) ওই হস্তক্ষেপ কখনোই নির্বাচনকে অবাধ করার জন্য ছিল না, রেজিম চেঞ্জ (ক্ষমতার বদল) করাই ছিল তাদের আসল লক্ষ্য। এখনো তাদের লক্ষ্য রেজিম চেঞ্জ। এ লক্ষ্য নিয়ে তারা এগিয়েছিল, কিন্তু দে ফেইল্ড (ব্যর্থ)। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সঠিক জবাব দিয়েছেন। আর ইন্টারনালি (দেশের ভেতরে) বিএনপি-জামায়াত মাটিতে শুয়ে পড়ে বলছে, আমরা মাটিতে পড়িনি। এটা তো হয় না, তারা অক্ষমতার প্রলাপ করছে। তারা জনগণের কাছে পরাজিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪–দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আরও বলেন, ‘বরিশাল শহরের চেহারা পাল্টে দেওয়ার চেষ্টায় প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করতে পারিনি এখনো। অন্য জেলাগুলোর মতো আমি চেষ্টা করেছিলাম বরিশালের সব সংসদ সদস্যদের একত্র করে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার, কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি। আমি চেষ্টা করব, সিনিয়ররাসহ এবার নতুন যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সম্মিলিত করে বরিশালের উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়ার। মন্ত্রী হওয়া বা না হওয়ার ওপরে কোনো কাজ নির্ভর করে না। উন্নয়ন-অগ্রগতি নির্ভর করে উদ্যোগের ওপরে। সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা পেলে আমার সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমি আমার উদ্যোগ নেব।’
জাতীয় রাজনীতির এই বর্ষীয়ান নেতা বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান চিকিৎসাকেন্দ্র। এই হাসপাতালের উন্নয়নে একাত্ম হয়ে সবার কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি নিজ সংসদীয় এলাকার উন্নয়নের ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্তি করেন।
সভায় ওয়ার্কার্স পার্টি বরিশাল জেলার সভাপতি নজরুল হক, সাধারণ সম্পাদক শেখ টিপু সুলতান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।