নাটোরে বিএনপির পদযাত্রা শুরুর আগে মোটরসাইকেলের বহর থেকে ককটেল নিক্ষেপ
নাটোরে বিএনপির পদযাত্রা শুরুর আগে মোটরসাইকেলের বহর থেকে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের পাশে একে একে ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুলিশবেষ্টিত অবস্থায় বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ করে।
নাটোর শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান খান চৌধুরীর দাবি, ওই মোটরসাইকেলের বহরে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ছিলেন। তাঁরা বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানোর জন্য ককটেল ফাটিয়েছেন।
তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ বিন আজিজ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর মতে, বিএনপি নিজেরাই ককটেল ফাটিয়ে সত্য ধামাচাপা দিচ্ছে।
জেলা বিএনপি, পুলিশ ও পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ৯টায় আলাইপুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রার আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সকাল ৭টা ৪৭ মিনিটে ১৫টি মোটরসাইকেলের একটি বহর বিএনপি কার্যালয়ের সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় ওই বহর থেকে ছয়টি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। মোটরসাইকেলের বহরটি কিছুক্ষণ পর শহরের দিকে ফিরে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী আসলাম হোসেন বলেন, তিনি অটোরিকশায় শহর থেকে রেলস্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। একই দিকে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল যাচ্ছিল। হঠাৎ বিএনপি কার্যালয়ের পশ্চিম পাশে কয়েকটি ছুড়ে মারা হয়। ককটেলগুলো তাৎক্ষণিক বিস্ফোরিত হয়।
ককটেল বিস্ফোরণের বিষয়ে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহম্মেদ বলেন, পুলিশ বিএনপির কর্মসূচিস্থলে যাওয়ার পর এমন ঘটনা ঘটেনি। সকালের দিকে বিএনপি কার্যালয় থেকে কিছুটা পশ্চিমে কয়েকটা শব্দ হয়েছে এবং কিছু জর্দার কৌটা পড়ে আছে বলে শুনেছেন। তাঁরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর নেতৃত্বে পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা এ দেশের জনগণের পক্ষে থাকুন। এতে যদি আপনাদের চাকরি চলে যায়, সুযোগ-সুবিধা হারান, তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হবে এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’
প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খাবার কিনে খেতে পারছেন না উল্লেখ করে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি শুরু করেছে। এ সরকারকে এখন একটা ধাক্কা মারলেই পড়ে যাবে। একজন মুমূর্ষু রোগীকে যেমন সর্বোচ্চ ওষুধ দিয়ে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করা হয়, তেমনি এ সরকার বাঁচার শেষ চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে যাঁরা অবস্থান নিচ্ছেন, তাঁদের চাকরি খাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যম এখন সরকারের সমালোচনা করতে পারছে না। সরকারের বিরুদ্ধে এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
পরে রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের নেতৃত্বে কয়েক শ বিএনপি নেতা-কর্মী নাটোর-রাজশাহী সড়কে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন। শহরের হাফরাস্তা ঘুরে তাঁরা আবার বিএনপি কার্যালয়ে ফিরে আসেন। পুরো সময় পুলিশ তাঁদের বেষ্টিত করে রাখে।