কেন্দুয়ায় বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলা-লুটপাটের ঘটনায় ১০ মাস পর মামলা
নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় বিএনপি নেতাদের বাড়ি ও দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। ঘটনার ১০ মাস পর গতকাল বুধবার কেন্দুয়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলাটি করা হয়।
মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সংস্কৃতি সম্পাদক অসীম কুমার উকিলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য অপু উকিল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক ভূঁঞাসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৪০০ জনকে।
মামলার বাদী নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম হিলালীর বাড়ির দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা জামাল উদ্দিন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছর ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিএনপির ডাকা অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় কয়েকটি স্থানে মশালমিছিল করেন দলে নেতা-কর্মীরা। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে কেন্দুয়া পৌর শহরে মিছিল বের করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। রাত পৌনে আটটার দিকে কেন্দুয়া থানা থেকে প্রায় ১৫০ গজ দূরে রফিকুল ইসলামের বাসা ভাঙচুর চালিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ পানির লাইন কেটে দেওয়া হয়। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চলে যান। কিছুক্ষণ পর আবার সংঘবদ্ধ হয়ে তাঁরা ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে রফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত কার্যালয়, রান্নাঘর, বিভিন্ন কক্ষের আসবাব ভাঙচুর করেন।
এরপর থানা-সংলগ্ন পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে আলমের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সাজিউড়া মোড় এলাকায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারসহ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়।
রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দিন (৮ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আমার বাসায় কীভাবে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন, তা প্রথম আলোসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কোনো অসত্য দিয়ে মামলা করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে অসীম কুমার উকিল ও অপু উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাঁরা আত্মগোপনে আছেন। মামলার তিন নম্বর আসামি আসাদুল হক ভূঁঞাকে আরেক মামলায় ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, কেন্দুয়া থানায় গত ২১ আগস্ট থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত চারটি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। তিনটি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে অসীম কুমার উকিলকে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কয়েকজন আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।