বিদেশ যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নগর বিএনপির এক নেতাকে আটকে দেওয়া হয়েছে। তাঁর নাম মঞ্জুর রহমান চৌধুরী। তিনি নগরের কোতোয়ালি থানা বিএনপির সভাপতি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই বিএনপি নেতাকে সৌদি আরবের মদিনাগামী একটি ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে আটকে যায় তাঁর বিদেশযাত্রা। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের গাড়ি–কাণ্ডে ওই বিএনপি নেতার বিদেশযাত্রা আটকে যায়। তিনি যে ভবনের ফ্ল্যাটে থাকেন, সেটির পার্কিং থেকে গতকাল বুধবার রাতে এস আলমের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে একটি ফ্লাইট করে স্ত্রীসহ মদিনায় যেতে ফ্লাইটে বসে যান মঞ্জুর রহমান চৌধুরী নামের এক যাত্রী। কিন্তু একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা হয়। পরে তাঁকে বিদেশে যেতে দেওয়া হয়নি। তাঁকে ছাড়াই ফ্লাইটটি দেরিতে ৬টা ২২ মিনিটে ছেড়ে যায়।
গতকাল রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকার একটি বহুতল ভবনের নিচে পার্কিং থেকে এস আলম গ্রুপের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। গাড়িটির নম্বর চট্ট-মেট্রো ঘ-১১-৫৩৪৪। বাংলাদেশ সড়ক পরিববহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধনে গাড়িটি এস আলমের মালিকানাধীন সোনালী লজিস্টিকসের নামে নিবন্ধন করা। এ ছাড়া ঠিকানা হিসেবে নগরের আসাদগঞ্জ এস আলম ভবনের ঠিকানা দেওয়া আছে।
বহুতল ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন কোতোয়ালি থানার বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী। সেখানে জব্দ করা ওই গাড়ি ছাড়াও আরও দুটি গাড়ি ছিল। পুলিশ যাওয়ার আগে এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।
এস আলমের গাড়ি–কাণ্ডে মঞ্জুর রহমান চৌধুরীকে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে আনা প্রসঙ্গে জানতে তাঁর মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে গতকাল রাতে প্রথম আলোকে তিনি বলেছিলেন, ‘গাড়িটি আমার বাসার নিচে পার্কিংয়ে কে রেখেছে জানি না। আমি রাখিনি।’
এর আগে গত ২৮ আগস্ট এস আলম গ্রুপের গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিজ এলাকায় সংবর্ধনায় এসে সমালোচনার মুখে পড়েন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরে তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
এ ছাড়া ২৯ আগস্ট সন্ধ্যায় নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বের করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন বিএনপি নেতাকে দল থেকে শোকজ করা হয়। পরে তাঁদের তিনজনের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।