কক্সবাজারে হোটেলকক্ষে বড় ছাড়, তবু পর্যটকের সাড়া কম
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কাছে কলতলীতে ছয়তলাবিশিষ্ট গেস্টহাউস ওয়েল পার্কে কক্ষ আছে ৪৪টি। আজ বুধবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুরো হোটেল ফাঁকা। ওয়েল পার্কের ব্যবস্থাপক আরিফুল ইসলাম জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে হোটেল, গেস্টহাউস ও কটেজ পর্যটকশূন্য। ঈদের দ্বিতীয় দিন (শুক্রবার) থেকে কিছু পর্যটক কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে আসতে পারেন। তাঁর হোটেলের ১১টি কক্ষ বুকিং হয়েছে।
পাশে ছয়তলা ভবনের ডায়মন্ড গেস্টহাউসে কক্ষ আছে ৪৮টি। সব কক্ষ খালি পড়ে আছে জানিয়ে গেস্টহাউসের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইমন বলেন, ঈদের ছুটিতে সৈকত ভ্রমণে আসতে মানুষের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে শুক্রবার থেকে টানা কয়েক দিনের জন্য পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে।
আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত সৈকত এলাকার অন্তত ৪২টি হোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ ও রিসোর্টে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোনো হোটেলে পর্যটক নেই। ঈদ উপলক্ষে শহরের সাত শতাধিক রোস্তোরাঁও বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী পয়েন্টের কয়েক শ দোকানপাট বন্ধ দেখা যায়। সৈকতে পর্যটক নেই বললেই চলে। আজ সকাল থেকে কক্সবাজারে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বৈরী পরিবেশে সাগরও উত্তাল রয়েছে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পর্যটকের উপস্থিতি আরও কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা হোটেলমালিকদের।
পর্যটক না থাকায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, টেকনাফ সমুদ্রসৈকত, ইনানী সৈকত, পাটোয়ারটেক, রামুর বৌদ্ধপল্লি, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র ফাঁকা হয়ে পড়েছে। তবে ঈদের ছুটিতে আসা পর্যটকদের জন্য হোটেল, মোটেল, রিসোর্টসহ বিনোদনকেন্দ্রে প্রস্তুতি চলছে। হোটেল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ নানাভাবে জানানো হচ্ছে বিনোদনকেন্দ্রগুলো।
এদিকে পর্যটক টানতে হোটেলকক্ষ ভাড়ায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। পাঁচ শতাধিক হোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজে আজ পর্যন্ত ১৯ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ। তিনি বলেন, গত রোজার ঈদের ছুটিতে (সাত দিনে) প্রায় ৯ লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল সৈকতে। তখন ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালো হয়েছে। কোরবানের ঈদে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে। বৈরী পরিবেশে পর্যটকের সংখ্যা আরও কমতে পারে। আজ দুপুর পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক হোটেলে অতিথি আছেন মাত্র কয়েক শ।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, পাঁচ শতাধিক হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসে দৈনিক পর্যটকের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৬০ হাজার। কিন্তু যে হারে কক্ষ বুকিং হচ্ছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে, কোরবানির ছুটিতে ২০-৩০ হাজারের বেশি পর্যটক আসবেন না।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, পর্যটকের হয়রানি রোধ ও অভিযোগ শোনার জন্য কলাতলী মোড়সহ কয়েকটি পয়েন্টে পৃথক তথ্য ও অভিযোগকেন্দ্র খোলা হয়েছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বেশি আদায় হচ্ছে কি না, তদারকির জন্য মাঠে থাকবেন একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত।