ময়মনসিংহ মেডিকেলে ১৯ দিনে ৭ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৯ দিনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, যেসব রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের অধিকাংশকে খুব খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। যথাযথ চিকিৎসা শুরুর আগেই তাঁদের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালটির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত ১৯ দিনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ফোকাল পারসনের দৈনিক তথ্যে দেখা গেছে, ৩১ অক্টোবর গাজীপুরের শ্রীপুরের সাজেদা খাতুন (৪৫), টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের আ. সাত্তারের (৫০) মৃত্যুর তথ্য দেওয়া আছে। ২ নভেম্বর ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার আবদুল লতিফ (৬০), ১১ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুরের আনোয়ারা (৫০), ১৪ নভেম্বর নেত্রকোনার বারহাট্টার মো. শাকিল (২১), ১৫ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুরের মো. মনির হোসেন (৩৫) ও গতকাল নেত্রকোনার কেন্দুয়ার শিল্পী আক্তারের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। গতকাল হাসপাতালে মোট ২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ, নারী ৪ জন ও শিশু ২টি।
এ বিষয়ে হাসপাতালটির ডেঙ্গু ওয়ার্ডের ফোকাল পারসন মহিউদ্দিন খান বলেন, আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই ময়মনসিংহ নগরের বাইরের। আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে তাঁরা আসেন খুব খারাপ অবস্থায়। তাঁদের চিকিৎসা শুরু করতে করতে খারাপ অবস্থার দিকে চলে যায়। চেষ্টা করেও বাঁচানো সম্ভব হয় না। জ্বরে আক্রান্ত হলেই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে ওষুধের সংকটে ময়মনসিংহ নগরীতে মশা নিধনে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম বন্ধ। অল্প পরিসরে কিছু কিছু এলাকায় ওষুধ ছিটানো হলেও নগরীতে মশার উপদ্রব বাড়ছেই। মশা নিধনে যে পরিমাণ ওষুধের মজুত আছে, তা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এইচ কে দেবনাথ। তিনি জানান, নিয়মিত কার্যক্রম চালানোর মতো ওষুধ থাকলেও ক্র্যাশ প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নেই, তা কেনার চেষ্টা চলছে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের এই কর্মকর্তার দাবি, ‘আমাদের নগরের ভেতরে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন নেই, এখন পর্যন্ত সিটিতে একজনও মারা যাননি। ময়মনসিংহ মেডিকেলে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত যাঁরা মারা গেছেন, তাঁরা সবাই বাইরের বাসিন্দা। রোগী পাওয়া যাচ্ছে, এমন এলাকার আশপাশে আমরা মশার ওষুধ ছিটিয়ে দিচ্ছি।’