কুষ্টিয়া কারাগার থেকে পালিয়েছেন কয়েকজন কয়েদি, নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী

কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের মূল ফটক ভেঙে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়েছেনছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের মূল ফটক ভেঙে বেশ কয়েকজন কয়েদি পালিয়েছেন। এ সময় কয়েকজন কারারক্ষীর ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। অন্তত ১৫ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই সেখানে লে. কর্নেল মাহবুব উল আলম শিকদারের নেতৃত্বে সেনাসদস্যরা গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেন। কারা সূত্র বলছে, কোনো অস্ত্র বা অন্য কিছু লুট হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা, ৩৫ থেকে ৪০ জন কয়েদি পালিয়েছেন।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে কারাগারের সামনে লে. কর্নেল মাহবুব উল আলম শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শোনার পর খুব দ্রুত বিশাল একটা ফোর্স নিয়ে আসা হয়। ভেতরে থাকা কারারক্ষীরাও ভালো কাজ করেছেন। খুব বেশি কয়েদি বের হয়ে যেতে পারেননি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। অস্ত্র লুট হয়নি। কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’

কারাগারের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সার্জেন্ট আকতার হামিদ জানান, বেলা আড়াইটার দিকে আকস্মিকভাবে ঘটনা ঘটে। ভেতরে থাকা বন্দীরা স্লোগান দিয়ে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে আসেন। পরে ৫০ থেকে ৬০ জন ভেতরে দরজা টান দিয়ে খুলে ফেলেন। এরপর তাঁরা মূল ফটকে এসে কারারক্ষীদের আঘাত করেন ও মূল ফটক ধাক্কাতে থাকেন। একপর্যায়ে ফটক খুলে গেলে দৌড়ে চলে যান। সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনা ঘটে যায়।

আকতার হামিদ বলেন, কারারক্ষীরা রাবার বুলেট ছোড়েন। ভেতরে থাকা কারারক্ষী এবং বাইরে থাকা সবাই এসে প্রতিহত করেন। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী চলে আসে। কোনো অস্ত্র লুট হয়নি।

জেলা কারাগারের সামনে থাকা কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দারা বলেন, ঘটনার সময় কারাগারের ভেতর গুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। টানা ১০ মিনিট ধরে গুলি হচ্ছিল। এই সময়ের মধ্যে বন্দীরা যে যাঁর মতো দৌড়ে পালাতে থাকেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সেনাবাহিনী
ছবি: প্রথম আলো

প্রধান সহকারী কারারক্ষী জয় প্রকাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুরের দিকে সড়কের পাশে একদল যুবক আসেন। তাঁরা এসে ধাক্কাধাক্কি করছিলেন, বলছিলেন “আমাদের লোকজন দাও।” তাঁদের প্রতিহত করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। একই সময়ে কারাগারের ভেতরে থাকা বন্দীরা কারারক্ষীদের মারধর করে ইট দিয়ে আঘাত করেন। দুজন কারারক্ষী মারাত্মক আহত হয়েছেন।’

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে কারাগারে ফিরে আসেন আহত উসমান আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিহত করার সময় বন্দীরা ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি আহত হন।

জেল সুপার আবদুল বারেক প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০ জন কারারক্ষী আহত হয়েছেন। কতজন বন্দী বের হয়েছেন, তার গণনা চলছে। কারা পালিয়ে গেছেন, তা পরে জানানো হবে। তবে কোনো জঙ্গি বা বড় ধরনের কোনো অপরাধী বের হতে পারেননি। কারারক্ষীরা প্রচুর ফাঁকা গুলি ছুড়েছেন। সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হলে তারা নিয়ন্ত্রণে আনে। কোনো বন্দী আহত হননি।