কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলে বরাদ্দ পাওয়া কক্ষ থেকে এক শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রোববার তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন হলটির প্রভোস্ট ওবায়দুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষক হেলাল উদ্দিনকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। অপর দুই সদস্য হলেন হলের আবাসিক শিক্ষক পার্থ সারথি লস্কর ও সহকারী প্রক্টর শরিফুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিস আদেশে বলা হয়, গত ৩০ মার্চ লালন শাহ হলে সংঘটিত ঘটনায় আবাসিক শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ তথ্য উদ্ঘাটন ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান করবে।
লালন শাহ হলে বরাদ্দ পাওয়া কক্ষ থেকে গত বৃহস্পতিবার এক ছাত্রকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মাহাদী হাসান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
মাহাদী হাসানের দাবি, লালন শাহ হলের ৪২৮ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ পেয়েছিলেন তিনি। ওই কক্ষে ওঠার পর জিনিসপত্রসহ তাঁকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার হল প্রভোস্টের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে মাহাদী হাসান উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬–১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিকের মাধ্যমে বাংলা বিভাগের একই বর্ষের তরিকুল ইসলাম ওরফে তরুণ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭–১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম ফয়সাল ও বাংলা বিভাগের ২০১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের আতাউর রহমান ওরফে রাজু তাঁকে হলে ডাকেন। এরপর তিনি হলে গিয়ে দেখতে পান, তাঁর বই–খাতা, তোশক, বালিশ কক্ষের বাইরে বারান্দায় পড়ে আছে। সেখানে আগে থেকেই তরিকুল, ফাহিম, আতাউরসহ আরও একজন উপস্থিত ছিলেন।
মাহাদী অভিযোগ করে বলেন, তিনি সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করলে ফাহিম বলেন, ‘তুই মাহাদী, কোন কক্ষে থাকিস?’ জবাবে ৪২৮ নম্বর কক্ষের কথা বললে জিনিসপত্র নিয়ে সেখানে অবস্থান করার কথা বলেন। তখন ফাহিম বলেন, ‘আগে কোথায় ছিলি?’ তখন তিনি ৩০৮ নম্বর কক্ষে এক ছাত্রের কাছে অতিথি হিসেবে থাকার কথা জানান এবং এ–ও বলেন, তিনি ৪২৮ নম্বর কক্ষ বরাদ্দ পাওয়ায় সেখানে উঠেছেন। এটা বলার সঙ্গে সঙ্গে আতাউর ধমক দিয়ে বলেন, ‘তুই কে? তোকে আগে কখনো হলে দেখিনি তো! কে তোরে হলে তুলেছে? ওই সব আবাসিকতার কাহিনি বাদ দে, আমরা যা বলব, হলে তা–ই হবে।’ তরিকুল বলে ওঠেন, ‘আমারে চিনিস তুই, আমি কে? ভালোই ভালোই ৪২৮ থেকে সবকিছু নিয়ে যাবি। কোথায় যাবি,৩০৮–এ থাকবি নাকি কোথায় থাকবি, আমরা জানি না।’ একপর্যায়ে বারান্দায় ফেলে রাখা বই–খাতা, তোশক–বালিশসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে ইঙ্গিত করে তাঁরা বলেন, ‘এখানে তোর সবকিছু আছে, নিয়ে চলে যাস।’