শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘কথোপকথন’, বরগুনায় আটক আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদাবাজির মামলায় কারাগারে

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবিরকে পুলিশ আটক করেছেছবি: সংগৃহীত

বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবিরকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করার পর বিচারক মাহবুব আলম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জাহাঙ্গীর কবির গতকাল মঙ্গলবার দাবি করেছেন, পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করা সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর মুঠোফোনে কথা হয়েছে।

১৫ আগস্ট ঘিরে বিশৃঙ্খল ঘটনা এড়াতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আজ সকাল ছয়টার দিকে বরগুনা শহরের আমতলা পাড় এলাকার বাসা থেকে ঢাকা ও বরগুনা সদর থানা-পুলিশের যৌথ অভিযানে জাহাঙ্গীর কবিরকে আটক করা হয়। পরে সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদারের করা চাঁদাবাজির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা পৌর পুরান লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশে একটি টিনশেড ঘরে হারুন মোটরস নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে ফোরকান নামের এক ব্যক্তিসহ অজ্ঞাতনামা ছয় থেকে সাত সন্ত্রাসী তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার ভয় দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে হত্যার হুমকি দিয়ে দোকানঘর ছেড়ে দিতে বলা হয়। পরে প্রাণের ভয়ে দোকানঘর ছেড়ে দেন হারুন অর রশিদ হাওলাদার।

আরও পড়ুন

হারুন অর রশিদ হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীর কবিরের নেতৃত্বে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল করে মালামাল লুট করে নিয়ে গিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ১৩ বছর ধরে প্রাণের ভয়ে তিনি পালিয়ে বেড়িয়েছেন। কোথাও ন্যায়বিচার পাননি। সরকারের পতন হওয়ার পর তিনি থানায় মামলা করেছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে আসা পুলিশের একটি বিশেষ দল ও সদর থানা-পুলিশের যৌথ অভিযানে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটের দিকে জাহাঙ্গীর কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হারুন অর রশিদ হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির করা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জাহাঙ্গীর কবির দাবি করেছিলেন, পদত্যাগ করে দেশ ছাড়া সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবার শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে তাঁর কথা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ–সংক্রান্ত একটি ভিডিওতে শোনা যায়, শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবিরকে বলছেন, ‘আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে যথাযথভাবে পালন করবেন।’

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ১০ আগস্ট বরগুনা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে জাহাঙ্গীর কবির অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেছিলেন, তারা ঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করবে।