ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের আয় ১৫ বছরে বেড়ে ১৩ গুণ
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর আয় ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। ১৫ বছরের ব্যবধানে তাঁর আয় বেড়ে ১৩ গুণ হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার আগে কৃষি খাত থেকে আয় শূন্যের কোটায় থাকলেও বর্তমানে এই খাতে তিনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন। অথচ স্থাবর সম্পদ হিসেবে তাঁর নিজ নামে কোনো কৃষিজমি নেই।
নবম থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শামসুল হকের জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। শামসুল হক পেশায় আইনজীবী। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমবার পাবনা-১ (বেড়া আংশিক-সাঁথিয়া) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন।
জানতে চাইলে শামসুল হক গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার অতিরিক্ত কোনো আয় নেই। বয়স হয়েছে, নিজের চিকিৎসা ও অন্যান্য খরচের জন্য কিছু টাকা ব্যাংকে জমা রেখেছি। আর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমি থেকে যখন যা পেয়েছি, তা-ই লিখেছি। আগে কিছুই পেতাম না, এখন পাচ্ছি। সেটাই হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।’
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় শামসুল হক শুধু পেশা থেকে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছিলেন। অন্য কোনো খাতেই তাঁর আর কোনো আয় ছিল না। দশম সংসদ নির্বাচনে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছিলেন ১৫ লাখ ১৯ হাজার ২৪১, একাদশ সংসদ নির্বাচনে দেখিয়েছিলেন ১১ লাখ ৪ হাজার ২৮৯ এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৮ টাকা; অর্থাৎ ১৫ বছরের ব্যবধানে শামসুল হকের আয় বেড়ে ১৩ গুণ দাঁড়িয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শামসুল হক বেশ কয়েকটি খাতে আয় দেখিয়েছেন। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে আয় করছেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৫৭৮, চাকরি থেকে ৬ লাখ ৬০ হাজার, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ লাখ ৪০ হাজার ও নিজের পেশা থেকে ২ লাখ টাকা।
আয়ের সঙ্গে গত ১৫ বছরে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শামসুল হকের অস্থাবর সম্পদ বলতে ছিল ১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ১৯ হাজার টাকা। আসবাবের মধ্যে খাট-সোফা ছিল ৫০ হাজার টাকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মধ্যে টিভি-ফ্রিজ ছিল ৪০ হাজার টাকার। আর সোনা ছিল ৮ তোলা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্থাবর সম্পদের মধ্যে শামসুল হক দেখিয়েছিলেন নিজ নামে ৩ কাঠা জমি, যার মূল্য ৯ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট যার মূল্য ২০ লাখ টাকা, যৌথ মালিকানায় ২১ বিঘা জমি। এই জমির ৩ বিঘার মালিক ছিলেন তিনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তিনি কৃষি খাতে আয় দেখালেও নিজের নামে কোনো জমি দেখাননি। যৌথ মালিকানার জমি সেই ২১ বিঘাই দেখিয়েছেন। যার মধ্যে তিন বিঘার মালিক তিনি।