ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা আদালতে ফিরছেন, জানালেন আইনমন্ত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীরা কাল সোমবার থেকে আদালতে ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সার্কিট হাউসে জেলা জজসহ একাধিক বিচারক, স্থানীয় প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দেওয়া আশ্বাসে আদালতের অচলাবস্থা দ্রুত নিরসন হবে বলে আইনজীবীরাও জানিয়েছেন। তবে রবি ও সোমবার তাঁদের পূর্বঘোষিত কর্মবিরতি চলবে বলে জানান আইনজীবীরা। তাঁরা কাল আইনজীবী সমিতির সভা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সার্কিট হাউসে পৌঁছান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সেখানে তাঁর সঙ্গে সভায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, আইনসচিব গোলাম সারোয়ার, জেলা জজ শারমিন নিগার, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩–এর বিচারক রবিউল হাসান, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নজরুল ইসলাম, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আল আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা, সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক সভাপতি শফিউল আলম ও নাজমুল হোসেন, আইনজীবী মাহবুব আলমসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন আইনজীবী। সেখানে সাড়ে ১০টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত আলোচনা চলে।
সভা শেষে বেরিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বর্জনের বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। আইনজীবীরা আদালত বর্জন প্রত্যাহার করবেন। আইনজীবীরা কাল আদালতে যাবেন।’
আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সভা শেষে বেলা সোয়া ১১টার দিকে সার্কিট হাউসের নিচে নামেন আইনজীবীরা। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। সভায় আমরা বলেছি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর মোহাম্মদ ফারুকের বিষয়ে কোনো ছাড় আইনজীবীরা দেবেন না। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জেলা জজ শারমিন নিগারের বিষয়ে আমাদের নমনীয় হতে বলেছেন। আমরা বিষয়টি সাধারণ সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব বলে জানিয়েছি। কাল আইনজীবীদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।’
তানভীর ভূঞা আরও বলেন, ‘বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে আছেন। তাই সমস্যার সমাধান হবে। আমরা আদালতে ফিরে যাব। আমাদের একটি ভবন নির্মাণ করে দেবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। আদালত চত্বরে রেইনশেড নির্মাণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এদিকে আজ সকাল থেকেই আদালতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলছে। দূরপ্রান্তের বিচারপ্রার্থীরা আদালতে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন। সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জজ আদালতের সরেজমিন ঘুরে বিচারপ্রার্থীদের ফিরে যেতে দেখা গেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা দায়রা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে বদলি ও নাজিরের শাস্তির দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা দুই আদালত বর্জন করে আসছিলেন। গত বুধবার থেকে আইনজীবীরা দুটি আদালতসহ জেলার সব আদালত বর্জন করে আসছেন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী।