সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চে ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও
সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভার মঞ্চে বিভাগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ১৮ জন প্রার্থীই উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে বক্তব্য দিয়েছেন ১৩ জন। তবে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, এমন অনেক নেতা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁরা কেউ বক্তৃতার সুযোগ পাননি।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন নেতা জানান, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বিভাগে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ১৫ জনের মধ্যে সাতজন মঞ্চে বসা ছিলেন। জনসভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পাশাপাশি অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষেও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে আসেন। মঞ্চে থাকা আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানান, দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাশাপাশি মঞ্চে বসা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী যখন মঞ্চে আসেন, তখন সবাই সালাম দেন। প্রধানমন্ত্রীও সবার সালাম হাসিমুখে গ্রহণ করেন। তবে কারও সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনো আলাপ হয়নি।
সিলেট বিভাগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে সিলেট-১ (নগর-সদর) আসনের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট-২ (বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনের শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর) আসনের প্রার্থী এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনের নুরুল ইসলাম নাহিদ, মৌলভীবাজার-১ (জুড়ী-বড়লেখা) আসনের প্রার্থী এবং বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মৌলভীবাজার-৪ (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আসনের আব্দুস শহীদ, সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের প্রার্থী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের মুহিবুর রহমান মানিক, হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই-শায়েস্তাগঞ্জ) আসনের মো. আবু জাহির, হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের প্রার্থী এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী জনসভায় বক্তব্য দেন।
সভার মঞ্চে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে সুনামগঞ্জ-১ আসনের মোয়াজ্জেম হোসেন (বর্তমান সংসদ সদস্য), সুনামগঞ্জ-২ আসনের জয়া সেনগুপ্তা (বর্তমান সংসদ সদস্য), সুনামগঞ্জ-৫ আসনের শামীম আহমদ চৌধুরী, হবিগঞ্জ-১ আসনের আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ও গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, হবিগঞ্জ-২ (আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং) আসনের আবদুল মজিদ খান (বর্তমান সংসদ সদস্য) এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনের সৈয়দ সায়েদুল হক বসা ছিলেন।
সভা শেষে আওয়ামী লীগের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তিনি বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন। তাই দলীয় সভাপতি যেখানে এসেছেন, সেখানে তাঁর স্বাভাবিকভাবেই থাকার কথা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে থাকার জন্য দাওয়াতও দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছেও ছিল স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মঞ্চে থাকুক। তাই তিনি সভায় গিয়েছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মঞ্চে থাকলেও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় কোনো কথাই বলেননি। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাঁর বক্তব্যে এ প্রসঙ্গ টেনেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ঝগড়া করবেন না। স্বতন্ত্র, স্বতন্ত্র ইলেকশন করবে। নৌকা নৌকার ইলেকশন—কারও সঙ্গে কারও ঝগড়াঝাঁটির কোনো প্রয়োজন নেই। এ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার জন্য, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের নেত্রী একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য স্বতন্ত্রদেরও প্রার্থী হতে বলেছেন। এতে কারও কিছু হারাবার নয়। নৌকার নিজের শক্তি আছে, ভয় পান কেন?’