নিহত ইশমামের ভাইকে চাকরি দিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ইশমামুল হকের ভাই মুহিবুল হকের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ইশমামুল হকের বড় ভাই মুহিবুল হককে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় অফিস সহায়ক পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে মুহিবুল হকের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে ২০ বছর বয়সী মুহিবুল হক বলেন, তিন ভাইয়ের মধ্যে ইশমাম ছিল মেজ। আট বছর আগে তাঁর বাবা মারা যান। এরপর পরিবারের হাল ধরতে স্থানীয় একটি দোকানে কাজ শুরু করেন তিনি। ভাইকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। এই চাকরির মাধ্যমে অন্তত পরিবারের হাল ধরতে পারবেন তিনি।

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মুহিবুলকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার জন্যও তিনি বলেছেন।

৫ আগস্ট ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হয় লোহাগাড়া উপজেলার মৃত নুরুল হকের ছেলে ইশমামুল হক (১৬)। ৭ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

গত সোমবার লোহাগাড়া উপজেলার দরজিপাড়া এলাকায় নিহত ইশমামুলের বাড়িতে যান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক। এ সময় ইশমামের পরিবারকে এক লাখ টাকা সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি। এ ছাড়া মুহিবুলকে চাকরি দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

এ সময় ইশমামুলের মা শাহেদা বেগমকে সান্ত্বনা দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আপনার সন্তান এখন জাতীয় বীর। ইশমামুলের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে।’ এ সময় ইশমামের স্মরণে তার বাড়ির পাশে কাঁচা সড়কটি পাকা করে তা শহীদ ইশমামের নামে নামকরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে দেড় বছর আগে ঢাকায় যায় ইশমামুল। সে ঢাকার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি চকবাজার এলাকায় একটি দোকানে চাকরি করত। ৫ আগস্ট ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মিছিলে যোগ দেয় সে।

ওই দিন সকালের দিকে মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে পিঠে গুলিবিদ্ধ হয় ইশমামুল। মিছিলে অংশগ্রহণকারী অন্য আন্দোলনকারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ইশমামের পরিবারকে সব সময় সব ধরনের সহযোগিতা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে। এ ছাড়া তার বাড়ির পাশে সড়কটির কাজ দ্রুত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।