দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ১৯ জন বর্তমান ও সাবেক নেতাকে গত বৃহস্পতিবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বিএনপি। নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের জবাব চেয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নেতারা জবাব দিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসেননি। এ কারণে ওই ১৯ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা চিঠিতে এই বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।
বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা জাহিদুর রহমান আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির পাঠানো এসব চিঠি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে এই ১৯ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব দিলেও তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসতে অস্বীকৃতি জানান।
জাহিদুর রহমান বলেন, বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। এ কারণে নির্বাচনের যেকোনো কার্যক্রম থেকে প্রতিটি ওয়ার্ড বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব স্তরের নেতাদের বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে ভোটারদের ভোট দিতে নিরুৎসাহিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
দলীয় সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার বিএনপির অন্তত ২১ জন বর্তমান ও সাবেক নেতা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে কামরুল আহসান মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। এ ছাড়া নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক ও চারজন সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যরা ওয়ার্ড বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতা।
বহিষ্কারাদেশের বিষয়ে কামরুল আহসান আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারণ দর্শানোর নোটিশটি জমা দিয়েছি। তবে এরপর এ ধরনের সিদ্ধান্তের কোনো চিঠি পাইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পরপরই আমি প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। এরপর মনোনয়ন জমা, প্রচার-প্রচারণা শুরু পর্যন্ত দলের কোনো স্তর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের কোনো নির্দেশনাও পাইনি। এখন নির্বাচনের আগে এসে এ ধরনের নির্দেশ পেলে তো আর মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো যায় না।’