দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত বীর সৈনিকদের সমাধিতে ১৩ দেশের কূটনীতিকের শ্রদ্ধা

কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ১৩ দেশের কূটনীতিক। আজ শনিবার

কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহত বিশ্বের ১৩ দেশের ৭৩৭ জন বীর যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ১৩ দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের প্রতিনিধিরা।

আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কূটনীতিকেরা কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত ওয়ার সিমেট্রি হলিক্রসের পাদদেশে প্রার্থনা ও ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলির মধ্য দিয়ে সৈনিকদের স্মরণ করেন।

কুমিল্লার এই ওয়ার সিমেট্রিতে শ্রদ্ধা জানান যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, পাকিস্তান, ডেনমার্ক, ইতালি, নরওয়ে, স্পেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১৩টি দেশ কিংবা জোটের রাষ্ট্রদূত এবং তাঁদের প্রতিনিধি ও বাংলাদেশের সামরিক প্রতিনিধিরা।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রদূত ও তাঁদের প্রতিনিধিরা সমাধিস্থল ঘুরে দেখেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত এবং পবিত্র বাইবেল পাঠের পর ফাদার ক্যাট্টিক প্রার্থনা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও বুড়িচং থানা-পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। ১৯৬২ সালে একজনের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তাঁর স্বজনেরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেলে এখানে বর্তমানে সমাধি রয়েছে ৭৩৭ জনের। ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন যোদ্ধার মধ্যে ইসলাম ধর্মের ১৭২ জন, বৌদ্ধধর্মের ২৪ জন, হিন্দুধর্মের ২ জন এবং বাকিরা খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীর। তাঁদের মধ্যে ৫৬৭ জন নাবিক, ১৬৬ জন বৈমানিক ও তিনজন সৈনিকের সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, কানাডার ১২ জন, অস্ট্রেলিয়ার ১২ জন, নিউজিল্যান্ডের ৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার ১ জন, অবিভক্ত ভারতের ১৭১ জন, রোডেশিয়ার ৩ জন, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬ জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬ জন, বার্মার একজন, বেলজিয়ামের একজন, জাপানের ২৪ জন এবং পোল্যান্ডের একজনের সমাধি রয়েছে।

কমনওয়েলথ গ্রেভ ইয়ার্ড কমিশন এই যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। প্রতিবছরের নভেম্বর মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনারসহ তাঁদের প্রতিনিধিরা এই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিহতদের স্মরণ করেন। সে ধারাবাহিকতায় এ বছরের ৯ নভেম্বর শনিবার তাঁরা সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। ২০২২ ও ২০২৩ সালে ১১ নভেম্বর শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন কূটনীতিকেরা।