ত্রাণ দেওয়ার খবরে যাচ্ছিলেন শহরে, পথে নৌকা ডুবে নিখোঁজ মা-মেয়েসহ তিনজন

সপ্তাহখানেক আগেও ত্রাণের জন্য সন্তান হাবিবাকে কোলে নিয়ে দোয়ারাবাজারে এসেছিলেন আশ্রয়ণ ঘরের বাসিন্দা জোছনা বেগম। নৌকা ডুবলে সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে জোছনাও সুরমা নদীর স্রোতে ভেসে নিখোঁজ হন। ছবিটি গত সপ্তাহে স্থানীয় এক আইনজীবীর তোলা
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে মা, মেয়েসহ তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা সদরের আজমপুর খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ তিনজনকে উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু।

নিখোঁজ তিনজন হলেন উপজেলার আজমপুর এলাকায় সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা গুলজান বেগম (৬৫), জোছনা বেগম (৩৫) ও তাঁর মেয়ে হাবিবা আক্তার (২)। এর মধ্যে জোছনার গ্রামের বাড়ি উপজেলার সদরের নৈনগাঁও গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম আইন উদ্দিন। আর গুলজান বেগম পশ্চিম মাছিমপুর গ্রামের নুর আলীর স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী আজমপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসহাক আলী বলেন, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি ছোট নৌকায় করে আটজন নদী পার হয়ে উপজেলা সদরে যাচ্ছিলেন। পাহাড়ি ঢল নামায় নদীতে এখন প্রবল স্রোত। নৌকাটি মাঝনদী দিয়ে যাওয়ার সময় পানির তোড়ে ডুবে যায়। তখন খেয়াঘাট ও আশপাশের লোকজন কয়েকটি নৌকা নিয়ে দ্রুত সেখানে গিয়ে পাঁচজনকে উদ্ধার করেন। বাকি তিনজন পানির স্রোতে ভেসে যান।

নৌকায় থাকা দিদারুন নেসা (৪০) বলেন, গুলজান বেগম তাঁর ফুফু। উপজেলা সদরে বন্যার্ত মানুষকে সাহায্য দেওয়া হবে খবর পেয়ে একসঙ্গে সবাই সেখানে যাচ্ছিলেন। জোছনার সঙ্গে তাঁর দুই মেয়ে হাবিবা ও আফসা (৭) ছিল। নৌকা ডুবে যাওয়ার সময় জোছনা দুই মেয়েকে ধরতে গিয়ে তিনি নিজেই ডুবে যান। দিদারুন নেসাও পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন নৌকায় থাকা তাঁর এক মামা তাঁকে বাঁচিয়েছেন। জোছনা বেগমের মেয়ে আফসাকে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

দোয়ারাবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমরা উদ্ধারকাজে আছি। নদীতে প্রবল স্রোত। তবু আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’