ফিলিং স্টেশনের গ্যাস শিল্পকারখানায়, প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ। আজ সোমবার সকালেছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহ নগরের ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সরবরাহের অভিযোগ তুলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মহাসড়কটির দিঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। পরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ময়মনসিংহ নগরের দিঘারকান্দা বাইপাস এলাকায় ইন্ট্রাকো ন্যাচারাল গ্যাস স্টেশন লিমিটেড, আকিজ ফিলিং স্টেশন লিমিটেড, আজাদ ফিলিং স্টেশন, নিটল গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডসহ কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক ফিলিং স্টেশন থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।

অটোরিকশার চালক কালাম মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ নগরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। কিন্তু মধ্যরাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের যানবাহনে সিলিন্ডারে করে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। আমরা যখন গ্যাস নিতে আসি তখন বলা হয়, গ্যাসের চাপ নেই; গ্যাস সরবরাহ বন্ধ।’

চালক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় ইন্ট্রাকো ন্যাচারাল গ্যাস স্টেশন লিমিটেড নামের ফিলিং স্টেশনে একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িতে গ্যাস সরবরাহের সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই সময় পাশের আকিজ, আজাদ ও নিটল গ্যাস ফিলিং স্টেশনেও গ্যাস বিতরণ বন্ধ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করা হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্যাস সরবরাহ ও ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে কোম্পানিতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের দাবি জানান তাঁরা।

এ বিষয়ে ইন্ট্রাকো ন্যাচারাল গ্যাস স্টেশন লিমিটেড ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপক শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘উত্তেজিত লোকজন ফিলিং স্টেশনের লোকজনের ওপর চড়াও হয়। গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করে। বিষয়টি প্রধান কার্যালয়কে আমরা জানিয়েছি। কোম্পানির গাড়িগুলোকে আর গ্যাস দেব না। স্থানীয় গাড়িগুলোকে গ্যাস দেওয়া হচ্ছে।’

ত্রিশালের বাসিন্দা ও চালক হাফিজুল ইসলাম এবং পরানগঞ্জের চালক শহিদুল ইসলাম বলেন, কোম্পানিতে গ্যাস নিয়ে যাওয়ায় গ্যাস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যানবাহনের জন্য ফিলিং স্টেশনগুলো হলেও এখান থেকে গ্যাস কোম্পানিতে কেন যাবে? কোম্পানির তো আলাদা গ্যাস লাইনই আছে।

তাঁরা দুজন আরও বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। গাড়ি চালায়া ভাত খাই। গ্যাস না পাইলে গাড়ি চালানি বন্ধ থাহে। বউ-পোলাপান লইয়া কষ্ট করি। আর তারা (কোম্পানি) গ্যাস নিয়ে বড়লোক হয়।’

সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সিলিন্ডারে করে গ্যাস সরবরাহ করার বিষয়টি জানে তিতাস কর্তৃপক্ষ। ময়মনসিংহের আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরঞ্জিত কুমার দে বলেন, ‘মৌখিকভাবে কয়েকবার নিষেধও করা হয়েছে। ফিলিং স্টেশন থেকে অন্য কোথাও গ্যাস সরবরাহ করা যাবে কি না, নীতিমালায় বিষয়টি স্পষ্ট নেই। এ জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। এর সুযোগ নিচ্ছে ফিলিং স্টেশনগুলো।’