বছরে সাত মাস বড় বড় জারা লেবু বেচে সংসার চালান কনু মিয়া
বেশ বড় আকৃতির লেবু জাতীয় ফল দুটি ঝুড়িতে নিয়ে বিক্রির জন্য বসেছেন কনু মিয়া (৫৮)। এগুলোকে বলে জারা লেবু। একেকটি লেবুর দাম তিনি চাইছেন ২০০ টাকা করে। আরেকটু কম দামে নেওয়ার জন্য দামাদামি করছিলেন কয়েকজন ক্রেতা। তবে ২০০ টাকার কমে কোনো লেবু বিক্রি করতে চান না তিনি।
সিলেটে বেশ পরিচিত এই ফলের চাষ হয় জৈন্তাপুর উপজেলায়। ওই উপজেলাতেই বাড়ি কনু মিয়ার। তিনি উপজেলার হরিপুরের শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল বুধবার বিকেলে সিলেট নগরের বারুতখানা এলাকায় দুটি ঝুড়িতে রশি বেঁধে একটি লাঠি দিয়ে কাঁধে করে বয়ে জারা লেবু বিক্রি করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে কাঁধ থেকে ঝুড়ি নামালে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
কনু মিয়ার সঙ্গে আলাপে জানা যায়, এপ্রিল থেকে অক্টোবর—বছরের এই সাত মাস জারা লেবুর মৌসুম। এ সময় ফলটির চাহিদা থাকে সিলেটজুড়ে। তাঁর নিজের বাগান নেই। তবে মানুষের বাগান থেকে এগুলো সংগ্রহ করে তিনি সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বিক্রি করেন। তিন ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ছয়জনের সংসার তাঁর। সাত মাস জারা লেবু বিক্রি করেন, বাকি পাঁচ মাস টুকটাক শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান।
জারা লেবু বিক্রি করে আয়–রোজগারের বিষয়ে কনু মিয়া বলেন, এ লেবুর চাষ হয় টিলা এলাকায়। নিজের টিলামতো জমি না থাকায় সেটি তিনি চাষ করতে পারেন না।
অন্যদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। লেবু বিক্রি করে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন তিনি। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর লেবুগুলো বিক্রি শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফেরেন না। লেবুগুলোর দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা পাওয়া মুশকিল। অনেকে শখের বসে হাতে নিয়ে দামাদামি করলেও কম ক্রেতাই কেনেন।
বাজারের তুলনায় কম দামে বিক্রি করছেন দাবি করে কনু মিয়া বলেন, আকার ভেদে একেকটি লেবু অনেকে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। কিন্তু তিনি বড়গুলো ২০০ টাকায় বিক্রি করেন। এলাকায় যত দিন এই লেবু পাওয়া যায়, তত দিন তিনি শহরে এনে বিক্রি করেন। শ্রমিকের কাজের তুলনায় এই কাজে পরিশ্রম কম, তাই এটাই করেন তিনি।