গাজীপুরে অপহরণের পর শিশুকে হত্যা, পরিবহনশ্রমিক গ্রেপ্তার
গাজীপুর নগরের চান্দনা এলাকায় সাত বছরের শিশুকন্যাকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে একটি ঝোপের ভেতর শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ওই রাতেই এক পরিবহনশ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপকমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান।
নিহত শিশুটির নাম মারিয়া আক্তার (৭)। তাঁর বাবার নাম মনজুরুল ইসলাম। পরিবারটি গাজীপুর নগরের বাসন থানার চান্দনা এলাকার আবদুল হালিমের বাসার ভাড়াটে। মারিয়া চান্দনা প্রতিভা মডেল একাডেমি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. জুয়েল (৩৯)। তিনি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানার উলানিয়া গ্রামের মো. আবদুল লতিফের ছেলে। তিনি একই মালিকের বাড়িতে মারিয়ার পরিবারের প্রতিবেশী ভাড়াটে। তিনি পরিবহনশ্রমিক।
উপকমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান বলেন, রোববার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শিশু মারিয়া বাড়ির কাছে খেলতে বের হয়েছিল। সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাসায় ফিরে না আসায় তার মা-বাবা আশপাশের ভাড়াটেদের বাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাননি। পরে একটি অজ্ঞাত মুঠোফোন নম্বর থেকে তাঁদের কাছে ফোন আসে। তাতে মারিয়াকে অপহরণের কথা জানিয়ে ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। মারিয়ার মা-বাবা দ্রুত পুলিশকে এ ঘটনা জানান। সোমবার রাত ৯টার দিকে তেলিপাড়া এলাকার একটি ঝোপের ভেতর একটি শিশুর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে নিখোঁজ মারিয়ার মা-বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি মারিয়ার বলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মারিয়ার বাবা বাদী হয়ে বাসন থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মুক্তিপণের জন্য ফোন করা নম্বরটির সূত্র ধরে প্রতিবেশী জুয়েলকে রাতেই নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।
উপকমিশনার আরও বলেন, নিহত শিশুর বাবার কাছ থেকে বেশ কিছুদিন আগে জুয়েল ৬০ হাজার টাকা ধার নেন। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জের শিশু মারিয়াকে অপহরণ করে তাঁর বাবার কাছে ২৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন জুয়েল। সেই টাকা না পেয়ে এবং শত্রুতার জেরে মারিয়াকে তেলিপাড়া এলাকায় নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশটি গাছের পাতা দিয়ে ঢেকে রাখেন। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত উপকমিশনার খায়রুল আলম, সহকারী কমিশনার ফাহিম আসজাদসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।