‘সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলায়’ সংঘর্ষ, দুই পুলিশসহ আহত ১০
মাদারীপুরে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৩০টির বেশি ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুই পুলিশসহ আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের কাঠপট্টি ও পূর্ব রাস্তি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন মাদারীপুর ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁরা হলেন সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মো. মামুন, সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পাঁচখোলা এলাকার বাসিন্দা আলম কবিরাজ, পশ্চিম রাস্তি এলাকার জাকির হোসেন, কাঠপট্টি এলাকার নাহিদ ব্যাপারী, পূর্ব রাস্তি এলাকার সোহান মাতব্বর ও মধ্য খাগদী এলাকার সরদার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেড় বছর আগে সদর উপজেলার পূর্ব রাস্তি গ্রামের অপু মুন্সির সঙ্গে শহরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার নিশি আক্তারের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে ছয় মাস আগে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। গতকাল বিকেলে বাড়ির কাছে দেখা হলে নিশির সঙ্গে কথা বলেন অপু। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নিশির পরিবারের লোকজন অপুকে মারধর করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পূর্ব রাস্তি এলাকার লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ৩০টির বেশি ককটেল ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে দুই পক্ষের দফায় দাফয় সংঘর্ষ। খবর পেয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ আহত হন অন্তত ১০ জন। ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কহিনুর বেগম বলেন, ‘হঠাৎ চারদিক থেকে শত শত লোকজন এসে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। ভয়ে দরজা বন্ধ করে দিই। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পূর্ব রাস্তি এলাকার বাসিন্দা বিদ্যুৎ ব্যাপারী বলেন, সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার ইস্যু ছাড়াও দুই গ্রামের দলাদলিও এখানে মুখ্য বিষয়। কেউ কাউকে কখনো ছাড় দেয় না। তুচ্ছ ঘটনাকেও বড় করে দেখা হয়। পান থেকে চুন খসলেই লাঠিসোঁটা নিয়ে দুই পক্ষ ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম সালাউদ্দিন বলেন, সংঘর্ষ থামাতে ২২টি ফাঁকা গুলি ছুড়তে হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আটক ব্যক্তিদের আদালতে তোলা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।