খুলনায় বিশেষ অভিযানের নামে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পুলিশ অসদাচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। তাঁরা ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির চলমান সংগ্রামে পুলিশকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় না করানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশেষ অভিযানের নামে গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ রোববার দুপুরে নগরের কেডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ করেন। দলটির নেতারা দাবি করেন, বিশেষ অভিযানের নামে গতকাল শনিবার থেকে পুলিশ ২৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম বলেন, দেশ আজ এক কঠিন সংকট অতিক্রম করছে। প্রজাতন্ত্রের সেবক হিসেবে পুলিশ প্রশাসনের কর্তব্য হলো মুক্তিকামী ১৮ কোটি মানুষের বিপক্ষে না দাঁড়িয়ে, অবৈধ নিশিরাতের সরকারের অন্যায় হুকুম তামিল না করে, সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করা।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী লুটেরা সরকার দেশকে খাদের কিনারে পৌঁছে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতি জনজীবনে নাভিশ্বাস তৈরি করেছে। জনগণকে ঋণের বোঝায় ডুবিয়ে লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে তারা বেগমপাড়া বানিয়েছে। দেশের রিজার্ভ আজ তলানিতে। অনিশ্চিত আগামীর দুর্ভাবনায় সারা দেশে বিভাগীয় শহরে বিএনপির গণসমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতি সরকারের জনবিচ্ছিন্নতা প্রমাণ করে দিয়েছে।
বিশেষ অভিযানের নামে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ ২৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপির নেতা শফিকুল আলম বলেন, মহানগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সমাজবিরোধীদের দমনের পরিবর্তে পুলিশ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বিএনপির কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি, গণহারে গ্রেপ্তার করছে। এ ছাড়া নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে অংশ নিলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দিচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।
সরকারের অন্যায়ের সহযোগী না হয়ে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির নেতা শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ বানচাল করতে বিশেষ অভিযানের নামে নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যে মহানগরের বিভিন্ন থানায় পুলিশের অভিযানে ২৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আড়ংঘাটার এক যুবদল নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তার ২৬ জন নেতা-কর্মীর পদ-পদবি ও ঠিকানা জানান নগর বিএনপির আহ্বায়ক। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল হাসান, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হোসেন, বিএনপির নেতা বদরুল আনাম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম, আশরাফুল আলম, এহতেশামুল হক, শেখ ইমাম হোসেন, আবু সাঈদ হাওলাদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।