জনগণ যদি ভোট দেয়, সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: ইসি আনিছুর রহমান
নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট দান করে, সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। আজ শুক্রবার মৌলভীবাজার সার্কিট হাউস মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘ভোটারের অংশগ্রহণই অংশগ্রহণমূলক। ভোটার এলেই সেটা অংশগ্রহণমূলক হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না করা দলের ওপর নির্ভর করে। তাদের নেতাদের ওপর, দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। জনগণ যদি নির্বাচনে ভোট দান করে, সেটাই অংশগ্রহণ নির্বাচন।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসি আনিছুর রহমান। মৌলভীবাজার সার্কিট হাউসের মুন হলে এ সভার আয়োজন করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে কে এল, না এল, সেটা কিন্তু আমাদের দেখার বিষয় নয়। ৪৪টি দল রেজিস্টার্ড (নিবন্ধিত)। ৪৪টি দলকে আমরা বিভিন্ন সময় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সবশেষ এ মাসের ৪ তারিখ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। সেখানে ২৬টি দল অংশগ্রহণ করেছিল, আমাদের আলোচনায় আসছিল। এখন কেউ যদি না আসে, আমন্ত্রণে কেউ সাড়া না দেয়, এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছুই করণীয় নাই। কে এল, না এল, সে জন্য আমরা অপেক্ষা করব না। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে, সংবিধান অনুযায়ী করছি।’
সভা সম্পর্কে আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার—অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন যাতে নিরপেক্ষ হয়। এ জন্যই তাঁদের (সভায় অংশগ্রহণকারী) ডেকেছিলাম।’
ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল থাকা নিয়ে ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘নেটওয়ার্ক বন্ধ করা হবে না। তবে কিছু অননুমোদিত অনলাইন, কিছু আইপিটিভি আছে, অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া আছে। তাঁদের কাছে আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার স্বার্থে অনুরোধ থাকবে, অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুযোগে যাতে অপপ্রচার বা মিথ্যা প্রচারণা না চালানো হয়।’
সিলেট বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ মিজান শাফিউর রহমান, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক উর্মি বিনতে সালাম। সভায় অন্যান্যের মধ্যে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ, বিজিবির অধিনায়ক, র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার, আনসার ও ভিডিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল হালিম খান। মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক, হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জান্নাত জাহান, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) পক্ষে কুলাউড়া থানার ওসি আবদুছ ছালেক, হবিগঞ্জের বিভিন্ন থানার ওসির পক্ষে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ডালিম আহমদ, মৌলভীবাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) পক্ষে শ্রীমঙ্গলের ইউএনও আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন, হবিগঞ্জের পক্ষে বাহুবলের ইউএনও মহুয়া শারমিন ফাতেমা বক্তব্য দেন।
এ ছাড়া সভায় হবিগঞ্জের আনসার ও ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট অরূপ রতন পাল, হবিগঞ্জ এনএসআইয়ের উপপরিচালক মো. আজমুল হোসেন, র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গলের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মাহফুজুর রহমান, ৪৬ বিজিবি শ্রীমঙ্গল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিজান, ৫৫ বিজিবি হবিগঞ্জের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমদাদুল বারী খান, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।