ভোলায় নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপসহকারী প্রকৌশলীর পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
তাৎক্ষণিক বদলিসহ কর্মস্থলে নানাভাবে ষড়যন্ত্র ও হয়রানির অভিযোগ তুলে ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ। গত সোমবার তিনি সদর উপজেলার ইলিশবাড়ি রেস্টুরেন্ট ও পর্যটনকেন্দ্র মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।
উপসহকারী প্রকৌশলীর অভিযোগ অস্বীকার করে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ বুধবার সকালে নির্বাহী প্রকৌশলীর পক্ষে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঠিকাদার।
সোমবার উপসহকারী প্রকৌশলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকারি চাকরি করেও তিনি জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশ নেন। এ ছাড়া ভোলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদারেরা মানুষের বাড়িতে গভীর নলকূপ বসানোর সময় মোটা টাকা ও শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে চাপ প্রয়োগ করেন। এসবের বিরোধিতা করায় নির্বাহী প্রকৌশলী ও তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গত ৫ আগস্টের পর তাঁর বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করেছেন। অধিদপ্তরে আওয়ামী লীগের দোসর ঠিকাদারি সিন্ডিকেট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেছেন। তাঁকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে বেআইনিভাবে তদন্ত করেন এবং নানা অপকর্মে ফাঁসাতে চেষ্টা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরই অধীনে নলকূপ বরাদ্দ আছে বলে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও গুজব ছড়িয়ে অসংখ্য মানুষের কাছে তাঁকে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন।
উপসহকারী প্রকৌশলী আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী ঠিকাদারের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সাজিয়ে গত ১৭ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় তাৎক্ষণিক বদলি করিয়েছেন। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে আজ বেলা ১১টায় ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর পক্ষে মো. আশরাফুল আলম নামের এক ঠিকাদার তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহর একাধিক আত্মীয় ভোলার আওয়ামী লীগ নেতা। তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা রকম অর্থনৈতিক দুর্নীতি করেছেন। অনেকের নামে গভীর নলকূপ বরাদ্দ হলেও তাঁরা নলকূপ পাননি। সেই গভীর নলকূপ অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। এ কারণে ওপর থেকে তদন্তে এসে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ পেয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন। বিনা কারণে উপসহকারী প্রকৌশলী ঠিকাদারদের ফাঁসাচ্ছেন। আমরা এসবের তীব্র নিন্দা জানাই এবং মাসুম বিল্লাহর অপসারণ চাই। যদি জনস্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবস্থা না নেয়, আমরাই তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মাহমুদুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে আগস্ট বিপ্লবের আগেই তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী নানা অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে লিখিত অভিযোগ পাঠান। তাঁরাই গোপনে অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না।