বরিশালে বিএনপির দুই মামলায় মঈন আবদুল্লাহর চার দিনের রিমান্ড
বরিশালে বিএনপির শোকমিছিলে হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে করা পৃথক দুই মামলায় কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহর দুই দিন করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ রোববার বিকেল চারটায় বরিশাল মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক নূরুল আমিন এ আদেশ দেন। এ ছাড়া পৃথক আরও দুটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঈন আবদুল্লাহ বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সেরনিয়াবাতের ভাই।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মঈন আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে করা দুই মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক দুদিন করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এ ছাড়া অন্য দুটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এদিকে মঈন আবদুল্লাহকে আদালতে হাজির করা উপলক্ষে আজ বিকেলে আদালত এলাকায় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, মঈন আবদুল্লাহকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই দিন আগে বরিশালে আনা হয়। এরপর দুই মামলায় তাঁকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় চারটি মামলা আছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ১৯ জুলাই বিকেলে নগরের সিঅ্যান্ডবি রোডে বিএনপি মিছিল বের করে। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার গত ২১ অক্টোবর কোতোয়ালি মডেল একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি মঈন আবদুল্লাহ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট দুপুরে নগরের সদর রোডে বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক গত ২৩ আগস্ট একটি মামলা করেন। মামলায় ৩৮১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। ওই মামলায় মঈন উদ্দিনকে আসামি করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী লস্কর নূরুল হক বলেন, তাঁরা আজ আদালতে মঈন আবদুল্লাহর জামিনের আবেদন করেছিলেন। আদালত দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে দুদিন করে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরবর্তী তারিখে তাঁরা আবার জামিনের আবেদন করবেন।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে রাজধানীর গুলশান-২ এলাকা থেকে মঈন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। পুলিশ জানায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি মহাসমাবেশে হামলায় আহত যুবদল নেতা শামীম মৃত্যুর ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় তখন মঈন আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল।
আবুল হাসানাতের তিন ছেলের মধ্যে মঈন আবদুল্লাহ মেজ। বড় ছেলে সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এবং বরিশালে বাবার রাজনীতি দেখভাল করতেন। ছোট ছেলে আশিক আবদুল্লাহ নিজ এলাকা আগৈলঝাড়া-গৌরনদীতে বাবার রাজনীতি দেখভাল করতেন। আশিক আবদুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদে থাকলেও মঈন আবদুল্লাহর স্থানীয় কোনো কমিটিতে পদ ছিল না। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। একই সঙ্গে ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক।