জাহাঙ্গীর আলম বললেন, আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি
নৌকার বিরুদ্ধে নয়, ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমার শ্রদ্ধার জায়গা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও আমার শ্রদ্ধার জায়গা এবং নৌকাও আমার একটা শ্রদ্ধার জায়গা। কিন্তু আমি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি ব্যক্তির বিরুদ্ধে, যে ব্যক্তি এই শহরকে (গাজীপুর) ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমার মা-ও সেই কথাটাই বলেছেন। বলেছেন, “বাবা, এই শহর রক্ষা করার জন্য যা যা করা দরকার করো।”’
তবে ওই ব্যক্তির নাম বলেননি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এখানে কথা বলছি না। যেহেতু আমি মনোনয়ন জমা দিয়েছি, আমি বলছি, যাঁরা ভালো লোক তাঁদের ভোট দেওয়া ভালো, আর যাঁরা খারাপ লোক, তাঁদের ভোট না দেওয়া ভালো।’
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আজ ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খান। বেলা তিনটার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে মা জায়েদা খাতুন ও নিজের নামে কেনা মনোনয়নপত্র জমা দেন জাহাঙ্গীর আলম।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মা মনে করেছেন, এখানে আমার ওপর অন্যায় করা হয়েছে, অবিচার করা হয়েছে। মা হিসেবে তিনি নিজে বলেছেন, “এই শহর আমাদের, জন্মভূমি আমাদের। এই শহর রক্ষা করতে হবে।” সে জন্য তিনি (মা) নিজেও ফরম উঠিয়েছেন। আমাকে অনুরোধ করেছেন তাঁর ফরম জমা দিতে। আমি মায়ের হয়ে ফরম জমা দিয়েছি। পাশাপাশি আমার নিজেরটাও জমা দিয়েছি।’
শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকবেন কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এখন কেউ যদি আমাকে সরিয়ে দেয়, তাহলে তো আমার কিছু বলার নাই। আমি আমার শহর রক্ষা করতে চাই। এই শহরের মানুষ আমাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করেছেন। আমি এই শহরের মানুষের কাছে পরীক্ষা দিতে চাই। আমি দেখাতে চাই, আমি রাইট (সঠিক) করেছি না কি রং (ভুল) করেছি। আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
কোনো চাপ আছে কি না, জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। যদি সরিয়ে দেওয়া হয়, তবে ওপরে আল্লাহ আছেন, নিচে গার্ডিয়ানরা (অভিভাবক) আছেন, তাঁরা বুঝবেন। যেহেতু আমার মা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, আমি মায়ের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি শেষ পর্যন্ত আমার মায়ের জন্য চেষ্টা করব।’
আজ সকাল থেকেই গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ চলছে। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে। আগামী ২৫ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।