বান্দরবানে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বড়দিনের উপহার ও চিকিৎসাসেবা দিল সেনাবাহিনী
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা এবং খাদ্য ও উপহারসামগ্রী বিতরণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উপলক্ষে আজ রোববার ৯৭ পদাতিক ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। বড়দিনকে সামনে রেখে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা।
রুমা সেনা জোনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩৮ ই বেঙ্গলের উদ্যোগে রোয়াংছড়ি উপজেলার ক্যাপলংপাড়া, দেবতা পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চিকিৎসাশিবির বসিয়ে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ৫০ জন নারী, ৩৯ জন শিশু, ২০ জন পুরুষসহ মোট ১০৯ জনকে বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। কর্মসূচি পরিচালনা করে ৩৮ ই বেঙ্গলের আরএমও ওমর ফারুকের নেতৃত্বাধীন একটি চিকিৎসক দল।
রোয়াংছড়ির রৌনিনপাড়া, পাইক্ষ্যংপাড়া, খামতাংপাড়া ও ক্যাপলংপাড়ায় বড়দিনের উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এসব পাড়ায় বসবাসকারীদের ৯৫ শতাংশ বম এবং ৫ শতাংশ খেয়াং জনগোষ্ঠীর। বড়দিনের উপহার পেয়ে পাড়াবাসী সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। উপহারসামগ্রী বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প কমান্ডাররা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাঁরা পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
১৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাকলাইপাড়া সাব জোনের আওতাধীন রুমা উপজেলার জারুলিয়াছড়ি পাড়ায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বী ম্রোদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই এলাকা খুবই দুর্গম এবং বাসিন্দারাও খুবই দরিদ্র। তাঁদের ৪০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, ১০ লিটার তেল, ১০ কেজি চিনি, ৫ কেজি চা–পাতা ও ৫ কেজি লবণ এবং আনুষঙ্গিক মসলা বিতরণ করা হয়। সেনা সাব জোনের থিনদোলতে ত্লাং টিওবি ক্যাম্প কমান্ডার এসব খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
বড়দিনের অনুদান পেয়ে জারুলিয়াছড়ি এলাকার কমিউনিটি ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পুরোহিত মেনপং ম্রো এবং পাড়ার কার্বারী সিনচং ম্রো বলেন, ‘বড়দিন আমাদের বড় উৎসব। সেনাবাহিনী যে সহযোগিতা করেছে, তা দিয়ে পাড়াবাসী পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদ্যাপন করতে পারবেন।’
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী সেনা কর্মকর্তারা বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতির লক্ষ্যে সেনাবাহিনী সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য বদ্ধপরিকর। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি-সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।