রাস্তার ইট তুলে নেওয়ার চেষ্টা

সখীপুরে সড়কের ইট তুলে এভাবেই রাস্তার দুই পাশে রাখা হয়। গতকাল উপজেলার কচুয়া পশ্চিম পাড়ায়ছবি: প্রথম আলো

সড়কে ইট বিছানোর ১৬ দিন পর ওই সড়ক থেকে ইট তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে এলাকাবাসীর চাপে ওই সড়কের দুই পাশে তুলে রাখা ইট বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি ওই ইউপি সদস্য।

অভিযুক্ত ওই ইউপি সদস্যের নাম মামুন শিকদার। তিনি কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিবি) থেকে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার শিকদার বাড়ি মোড় থেকে মজিদ শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত ৪০০ মিটার ইট-সলিং প্রকল্প দেওয়া হয়। গত ২৩ ডিসেম্বর কালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন ওই প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০ মিটার ইট-সলিং কাজের উদ্বোধন করেন। নির্মাণের দিন চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী লুৎফর রহমান তাঁর ফেসবুক আইডিতে সড়ক উদ্বোধনের ছবি পোস্ট করেন। সড়ক নির্মাণের ১৬ দিন পর মঙ্গলবার হঠাৎ করে ওই ইউপি সদস্য দুজন শ্রমিক দিয়ে ১০০ মিটারের ওই সড়কের তিন হাজার ইট তুলে বাড়িতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় লোকজনের চাপের মুখে শ্রমিকেরা ওই সড়কের দুই পাশে তুলে রাখা ইটগুলো নিয়ে যেতে পারেননি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়ক থেকে তোলা ইটগুলো দুই পাশে পড়ে আছে। ওই সড়ক থেকে ৪০০ মিটার দূরে ইউপি সদস্য মামুন শিকদারের বাড়ি। ওই সড়কের পাশেই কৃষিকাজে লিপ্ত থাকা সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে এ সড়কে ইট বিছানো হয়েছে। ওই সময় চেয়ারম্যান সাহেব নিজে উপস্থিত হয়ে সড়কের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। মঙ্গলবার দেখলাম দুজন শ্রমিক ওই ইটগুলো তুলে ফেলছেন। এলাকার কয়েকজন যুবক এসে ভিডিও করায় ইটগুলো কেউ সরিয়ে নিতে পারেনি।’

এ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য মামুন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা আমার বাড়ির রাস্তা। প্রকল্পটি এখনো পাস হয়নি। ২৩ ডিসেম্বর আমার নিজের টাকা দিয়ে তিন হাজার ইট ও বালু কিনে এনে সড়কটি করেছিলাম। কিন্তু পিআইও সাহেব পরিদর্শনে এসে কাজটি ভালো হয়নি বলে অভিযোগ করেন। এদিকে আমাদের গ্রামের একজন মাটি ব্যবসায়ী তিনি ওই সড়ক দিয়ে ১০০ ট্রাক মাটি নেবেন বলে জানান। এ কারণে সড়কটি যাতে নষ্ট না হয়, এ জন্য আমি ইটগুলো তুলে ফেলেছি। মাটি নেওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী আবার সড়কটি নতুন করে ভালোভাবে নির্মাণ করে দেবেন।’

কচুয়া গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী নেওয়াজ আলী বলেন, ‘ওই সড়ক দিয়ে আমার কিছু মাটি নেওয়া দরকার। ইউপি সদস্যের অনুমতি নিয়ে দুজন শ্রমিক দিয়ে আমি সড়কের ইটগুলো তুলে সড়কের পাশেই রেখেছি। মাসখানেক পর আবার সুন্দর করে নির্মাণ করে দেব।’

কালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জামাল হোসেন বলেন, ‘ইউপি সদস্য মঙ্গলবার আমাকে বলেছেন, ওই সড়ক দিয়ে মাটি নিতে এক মাস সময় লাগবে। মাসখানেক পর আবার সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করবেন। তবে সড়কে বিছানো ইট তোলা ঠিক হয়নি।’

পিআইও তাহমিনা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়ক থেকে ইউপি সদস্যের ইট তোলার ভিডিওটি আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। বিষয়টি মঙ্গলবার তাৎক্ষণিকভাবে আমি ইউপি সদস্যকে বলেছি। প্রকল্পটি পাস না হলেও ওই সড়কের ইট তুলে নেওয়া ঠিক হয়নি।’