রায়পুরার চরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর বালুখেকো দুর্বৃত্তদের গুলিবর্ষণ
নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযানে যাওয়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল চরমধুয়া ইউনিয়নের সমীবাদ এলাকার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। বালু উত্তোলনকারী খননযন্ত্র (ড্রেজার) থেকে ১০-১২টি গুলি ছোড়া হয়েছে। এতে অল্পের জন্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার, ভূমি (এসি ল্যান্ড), জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্তত ২৫ জন।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম বলেন, চরমধুয়া ইউনিয়নের দুটি অংশে মেঘনা নদীতে অবৈধ খননযন্ত্রের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করার খবর জানতে পারে উপজেলা প্রশাসন। বালু উত্তোলন বন্ধে আজ দুপুরে দুটি স্পিডবোটে করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িত একটি খননযন্ত্র জব্দ এবং দুজনকে আটক করা হয়। অভিযানের খবর পেয়ে সেখানকার আরও কয়েকটি খননযন্ত্র নিয়ে বালুখেকো দুর্বত্তরা পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকার আরেকটি অবৈধ বালুমহালে অভিযান চালাতে গেলে কাছাকাছি পৌঁছানোর পর অভিযান দলের সদস্যদের লক্ষ্য করে একাধিক খননযন্ত্র থেকে উপর্যুপরি ১০-১২টি গুলি ছোড়া হয়। পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য না থাকায় ওই অভিযান অসমাপ্ত রেখেই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ফিরে আসেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সদস্যরা। তবে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলি কারও শরীরে বিদ্ধ হয়নি।
চরমধুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আহসান শিকদার বলেন, নদীতীরবর্তী স্থান থেকে কাটিং ড্রেজারের পরিবর্তে নিষিদ্ধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে প্রতিবছরই নদীভাঙনে শত শত বাড়িঘর বিলীন হচ্ছে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে বালুখেকোরা অবৈধভাবে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। একাধিকবার জেল-জরিমানা করা হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না এসব বালুখেকোদের। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুম্বক ড্রেজার দিয়ে দিনে-রাতে বালু তুলছে তারা। বালুখেকোদের আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পান না।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেওয়া রায়পুরার ইউএনও মো. মাসুদ রানা জানান, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাই। এ সময় খননযন্ত্র থেকে বালু উত্তোলনকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে ১০-১২টি গুলি ছোড়ে। গুলি ছোড়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওই স্থানে যৌথ বাহিনী নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’