ঢাকার উত্তরা
দিয়াবাড়িতেও ইজতেমার প্রস্তুতি
দিয়াবাড়িতে ১৮ জেলার মুসল্লিদের রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বয়ান করা হবে টঙ্গীর মূল ইজতেমা মাঠে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেটি প্রচার করা হবে দিয়াবাড়িতে।
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠের পাশাপাশি এবার রাজধানীর উত্তরায়ও ইজতেমা পালন করতে চাচ্ছেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। উত্তরার দিয়াবাড়ি বউবাজার এলাকায় রাজউকের প্রায় ৪০ একর জায়গায় চলছে ইজতেমার আয়োজন। ১৮ জেলার মুসল্লিদের নতুন জায়গায় রাখার চিন্তাভাবনা তাঁদের। তবে এ বিষয়ে এখনো অনুমতি দেওয়া হয়নি প্রশাসন থেকে।
তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। গত ১৫ নভেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগের আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ফেব্রুয়ারির ২, ৩ ও ৪ তারিখে। পাঁচ দিন বিরতির পর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ফেব্রুয়ারির ৯, ১০ ও ১১ তারিখে। দুই পক্ষেরই ইজতেমা পালনের সরকার নির্ধারিত জায়গা গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরের মাঠ।
মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা বলছেন, প্রতিবছর ইজতেমায় তাঁদের প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। ইজতেমা মাঠে ধারণের ক্ষমতা থাকে না। মুসল্লিরা মাঠে জায়গা না পেয়ে মাঠসংলগ্ন সড়ক–মহাসড়কে অবস্থান করেন। এসব মুসল্লির কথা ভেবে উত্তরার দিয়াবাড়িতে রাজউকের খালি জায়গা বেছে নিয়েছেন তাঁরা। সেখানে ১৮টি জেলার মুসল্লিরা অবস্থান করবেন। বয়ান করা হবে মূল ইজতেমা মাঠে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেটি প্রচার করা হবে দিয়াবাড়িতে।
জুবায়েরের অনুসারীদের ইজতেমা আয়োজকদের প্রধান মাহফুজ হান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। মাঠে জায়গা হয় না। এ কারণে দিয়াবাড়ির ফাঁকা জায়গাটুকু ব্যবহার করছি। এর আগেও এখানে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা পালন করেছি।’
এ বিষয়ে এখনো প্রশাসনিক অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শাজাহান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘উত্তরায় ইজতেমা আয়োজনের বিষয়ে এখনো অনুমতি নেই। তবে তারা (আয়োজক কমিটি) অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত আছি।’
দিয়াবাড়িতে ইজতেমার বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইজতেমার বিষয়টি আমাদের এখানে (উত্তরায়) এবারই প্রথম। তাই আমরা ইজতেমা আয়োজকদের সঙ্গে মিটিং ডেকেছি। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেট্রোরেলের উত্তরা ২ নম্বর স্টেশনের পাশে বউবাজার। সেখানে বিশাল খোলা মাঠে চলছে ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির কাজ। ইতিমধ্যে বাঁশ পোঁতা হয়ে গেছে। মুসল্লিরা দলে দলে যোগ দিয়ে শামিয়ানা টানাচ্ছেন। কোথাও কোথাও চলছে অস্থায়ী শৌচাগার, গোসল ও অজুখানা নির্মাণের কাজ। পুরো মাঠে মুসল্লিদের সমাগম। প্রত্যেকে নিজেদের মধ্যে কাজ ভাগ করে নিয়ে মাঠ প্রস্তুত করছেন।
দিয়াবাড়িতে মাঠ প্রস্তুতির দায়িত্বে থাকা মুরব্বি মো. ফরিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুসল্লিদের পানি সরবরাহের জন্য নতুন করে সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছে। অস্থায়ী শৌচারগার ও অজুখানা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। সব মিলিয়ে আমাদের এখানে প্রায় দুই লাখ লোকের সমাগম হবে। বয়ান প্রচার করা হবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।’