গাজীপুরে সর্বনিম্ন বেতনসহ ছয় দফা দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
সরকার ঘোষিত সর্বনিম্ন বেতনসহ ছয় দফা দাবিতে গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ শনিবার সকাল আটটায় গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে তাঁরা এ বিক্ষোভ করেন।
কারখানাটির শ্রমিক সফিকুল ইসলাম বলেন, সরকার সর্বনিম্ন বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ সেই বেতন সবাইকে দিচ্ছে না। একেকজনকে একেক ধরনের কথা বলে সেই বেতন দিতে গড়িমসি করছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত কাজ করাচ্ছে, কিন্তু ওভারটাইমের টাকা দিচ্ছে না। যে কারণে তাঁরা বাধ্য হয়ে দাবি আদায়ে সড়কে নেমেছেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কোনাবাড়ী এলাকার মেইগো বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের গত বৃহস্পতিবার বেতন দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছু শ্রমিকদের সরকার নির্ধারিত বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হলেও বেশির ভাগ শ্রমিকদের সেই বেতন দেওয়া হয়নি। এতে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার কারখানা বন্ধ থাকায় বঞ্চিত শ্রমিকেরা প্রতিবাদ জানাতে পারেননি। আজ সকালে শ্রমিকেরা যথারীতি কাজে যোগ দেন। পরে সকাল আটটার দিকে তাঁরা কাজ বন্ধ করে সরকার নির্ধারিত বেতনসহ ছয় দফা দাবিতে সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেন।
দাবিগুলোর মধ্যে আছে—সরকার নির্ধারিত নতুন বেতন কাঠামো অনুসারে গ্রেড ১ থেকে ৪–এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা, তফসিল ‘ক’ ও তফসিল ‘খ’ অনুসারে বেতন নির্ধারণ করা, ১০ ঘণ্টা কর্মদিবসের পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা করা, বেসিক বেতন সরকারি নিয়মে করা, ওভারটাইমের হার সরকারি নিয়ম অনুযায়ী করা এবং অধিকার আদায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছাঁটাই করা থেকে বিরত থাকা।
শ্রমিকদের ভাষ্য, আজ সকালে কারখানাটির চার শতাধিক শ্রমিক কারখানার ভেতরেই বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা কোনাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে কোনাবাড়ী থানার পুলিশ ও শিল্প পুলিশ দাবির বিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করলে সকাল পৌনে ১০টার দিকে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. খালিদ হাসান বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু তাঁদের মনমতো হয়নি। এ বিষয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম বলেন, আজ সকালে বে-ইকোনমিক জোনের সামনে শতাধিক শ্রমিক সড়কে নেমে আসেন। পরে তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।