রাজনগরের দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়ক ছোট–বড় গর্তে ভরা, দুর্ভোগ
মৌলভীবাজারের রাজনগর-কমলগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়কের টেংরা-তারাপাশা অংশে চলতে গিয়ে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের কারণে যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। ভাঙা সড়কের কারণে গাড়িচালকদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। এ ছাড়া চলাচলে যানচালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
এই সড়ক দিয়ে রাজনগর উপজেলার কামারচাক, কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার, কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করে থাকে। এ ছাড়া রাজনগর-কমলগঞ্জের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক।
গত রোববার বিকেলে দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়কের টেংরা-তারাপাশা অংশ ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের করতল, সালন, হরিপাশা, কাচারি, তারাপাশা বাজারের মধ্যে প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গর্ত। যানবাহন চলাচলের সময় যানবাহনগুলো কাত হয়ে, হেলেদুলে কোনো রকম গর্তের স্থানগুলো অতিক্রম করছে। বৃষ্টি হলে গর্তগুলো পানিতে ভরপুর থাকে। বৃষ্টির সময় গর্তের গভীরতা বুঝতে না পেরে অনেক সময় চালক দুর্ঘটনার শিকার হন। এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ স্থান অনেক। তারাপাশা বাজারে সড়কের অবস্থা আরও শোচনীয়।
সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক অজয় কর রোববার গাড়ি চালানোর সময় প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাস্তা ভাঙা অয়ায় (হওয়ায়) গাড়ির নাট-বল্টু ঢিলা অই (হয়ে) যায়। সারা গাড়ি ঝরঝরা অই যায়। নয়া (নতুন) গাড়ির হকলতা গেছেগি (সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে)।’
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অটোরিকশা, ট্রাকসহ কয়েক শ ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। সড়ক দিয়ে রাজনগর, মৌলভীবাজার, টেংরা, তারাপাশা, শমসেরনগর, পতনউষার, কাউকাপন, করাইয়া, মৌলভীচকসহ অসংখ্য ছোট-বড় স্ট্যান্ডের গাড়ি চলে। এ ছাড়া বালি, রড-সিমেন্ট, ধানসহ বিভিন্ন ভারি পণ্যবাহী ট্রাক এই সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করে। ভারি যানবাহন চলাচল সড়কটি ভেঙে যাওয়ার একটা বড় কারণ। সড়কটিতে ভারি যানবাহন চলাচল এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় এক বছরের বেশি সময় থেকে এটি ভাঙতে শুরু করেছে। টেংরা থেকে তারাপাশা পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার। এই অংশের টেংরা ইউনিয়নের করতল থেকে কামারচাক ইউনিয়নের তারাপাশা বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ, গর্ত তৈরি হয়েছে।
শিক্ষক জয়নাল আবেদীন রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারপাশা বাজারের কলেজ থেকে চৌমোহনা পর্যন্ত ২ থেকে ৩০০ মিটার এলাকা সবচেয়ে বেশি খারাপ। সামান্য বৃষ্টি দিলেই রাস্তার ওপর পানি জমে যায়। ভাঙাচুরা গর্তে চলাচলের উপায় থাকে না।’
রিপন মিয়া, আরিয়ান হোসেনসহ তারাপাশা বাজারের কয়েকজন গাড়িচালক জানালেন, কোনো সময় দিনে, কখনো সপ্তাহে গাড়িতে কাজ করাতে হয়। এতে করে কারও কারও মাসে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়ে যায়।াজনগর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, টেংরা-তারপাশা দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়কের একটি অংশ। দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়কের দৈর্ঘ্য হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার। দেওয়ানদীঘি-পালপুর সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ আগে যে প্রকল্পে এই সড়কটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেই প্রকল্প পরিচালক সড়কটি পরিদর্শন করে গেছেন।
রাজনগর উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) রাজু সেন বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব রাস্তার কাজ করা হবে। এই সড়কটি ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। মিটিংয়ে এ কথাগুলো বলা হয়। কিন্তু ভারি যান চলাচল বন্ধ হচ্ছে না।’