সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে নেতা–কর্মীদের হুমকি ও গালাগালের অভিযোগ

সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. কামাল উদ্দীন। আজ সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবেছবি: প্রথম আলো

সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের গালাগাল ও হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দীন ওরফে বাদশা।

আজ সোমবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাও উপস্থিত ছিলেন।

আবদুস সালাম মুর্শেদী এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। এই আসনে একবার উপনির্বাচনসহ পরপর তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় সাত-আট বছর ধরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে নৌকার বিপক্ষে কাজ করছেন রূপসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দীন। এ কারণে তিনি দলীয়ভাবে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী তাঁর সঙ্গে নেই। সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তাই তিনি সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে মানুষের ও দলের অনুকম্পা পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এবারের নির্বাচনে খুলনা-৪ আসনে সালাম মুর্শেদীর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার ভাই এস এম মোর্তজা রশিদীর। তাঁর পক্ষে কাজ করেন তিন উপজেলার আওয়ামী লীগের একাংশের নেতারা।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে নির্যাতন করেছিল, এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীদের সালাম মুর্শেদীর লোকজন সে ধরনের নির্যাতন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং বক্তব্য দেন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন অনলাইনমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যের অংশবিশেষ প্রচারিত হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নের সভায় প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে যেসব নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের অশ্লীল ভাষায় হুমকি দিয়েছেন। তিনি নেতাদের পদ-পদবি খেয়ে ফেলার হুমকিই শুধু দেননি, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষের নেতাদের সালাম দিতেও জনগণকে নিষেধ করেছেন।

সংসদ সদস্য দায়িত্বের এখতিয়ার-বহির্ভূতভাবে রূপসার আইচগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দীন সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, সালাম মুর্শেদী উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ‘মীরজাফর’, ‘কুকুর’ বলে গালি দিয়েছেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকার বলে আখ্যায়িত করেছেন। একজন সংসদ সদস্যের এ ধরনের উক্তি স্বাধীনতার মহান সৈনিকদের শুধু অপমানিত করেনি, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিতর্কিত করেছেন।