মেহেরপুরে সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ, এসপি নাহিদুলসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ফরহাদ হোসেনছবি: বাসস

মেহেরপুরে জামায়াত নেতা তারিক মো. সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনার ১০ বছর পর আদালতে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তৎকালীন পুলিশ ‍সুপার (এসপি) নাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে নিহতের ছোট ভাই তাওফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন মেহেরপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল জলিল, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিম সাঈদ মোহাম্মদ মজুমদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফরিদ হোসেন, র‌্যাবের গাংনী ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন আশরাফ হোসেন, র‌্যাবের ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবির নায়েক সুবেদার মো. আসাদ মিয়া, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আক্তার, সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম, সদর থানার উপপরিদর্শক আ. হান্নান, কনস্টেবল সাধন কুমার, গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল নারদ কুমার, সদর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বারিকুল ইসলাম, সদর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য দরুদ আলী।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি বড় বাজার এলাকা থেকে জেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক তারিক মো. সাইফুল ইসলামকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও ডিবির সদস্যরা তুলে নিয়ে যান। ওই দিন বিকেলে তারিকের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস তৎকালীন পুলিশ ‍সুপার নাহিদুল ইসলামের কাছে খোঁজ নিতে যান। তখন নাহিদুল জানান, তারিক পুলিশ হেফাজতে নেই। ওই দিন রাতেই তারিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি করে হত্যা করেন। ময়নাতদন্ত ছাড়াই পুলিশ হেফাজতে তাঁকে দাফন করা হয়। যেহেতু ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল; এ কারণে তারিক হত্যা মামলা পুলিশ নেয়নি। এখন আবার নতুন করে মামলা করা হলো।

মামলার বাদীর আইনজীবী মারুফ আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালে জামায়াত নেতা তারিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সাবেক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল হত্যা করেন। তারিক হত্যাকাণ্ড খুব আলোচিত ঘটনা হলেও আদালত কিংবা থানায় মামলা করতে পারেনি নিহতের পরিবার।

জেলা জামায়াতের বর্তমান সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, স্বৈরাচার সরকারের নানান অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন তারিক। তিনি মেহেরপুরের ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এ কারণে বন্দুকযুদ্ধের নামে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।

সদর থানার ওসি শেখ কনি মিয়া বলেন, যেহেতু আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে, পুলিশ মামলাটির এজাহার নিয়ে তদন্ত করবে।