গাজীপুরে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা, কারণ নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য পরিবার ও স্থানীয়দের
গাজীপুর মহানগরে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে নগরের বাঙ্গালগাছ বাঁশপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতে সাড়ে ৯টায় পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মহিষকুরা এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৩২) ও তাঁর ভাই মো. শুক্কুর আলী (২৮)। তাঁরা নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভুরুলিয়া এলাকার আবদুল রশিদের বাড়ির ভাড়াটে।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পাওনা টাকা আনতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে স্থানীয় মানুষের দাবি, দলবল নিয়ে দোকানে হামলা চালাতে এলে স্থানীয় লোকজন দুই ভাইকে পিটুনি দিয়ে হত্যা করেন।
নিহত ব্যক্তিদের বড় ভাই আমিরুল ইসলাম বলেন, তাঁর ভাই শফিকুল ইসলাম বলাকা বাসের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। শুক্কুর আলী অটোরিকশাচালক ছিলেন। তাঁদের দুজনের কাছে থেকে বাঙ্গালগাছ এলাকার হিমেল, সুমন ও রাসেল কিছুদিন আগে ১০ হাজার টাকা ধার নেন। গতকাল টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেই টাকা আনার জন্য অটোরিকশা নিয়ে শফিকুল ও শুক্কুর বাঙ্গালগাছ এলাকায় যান। সেখানে তাঁদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলে দুই ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
একই দাবি করেছেন নিহত শফিকুলের স্ত্রী সুমাইয়া। তিনি বলেন, বাঙ্গালগাছ এলাকায় একজন দোকানদারদের সঙ্গে টাকাপয়সা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। সে দ্বন্দ্বের জেরে তাঁর স্বামী ও দেবরকে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, নিহত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত মঙ্গলবার তাঁরা মারামারির একটি মামলায় জেল থেকে জামিনে মুক্তি পান।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শফিকুল ও শুক্কুর গতকাল কয়েকটি অটোরিকশাযোগে ২০ থেকে ২৫ জন লোক নিয়ে এসে বাঙ্গালগাছ বাঁশপট্টি এলাকায় দুটি দোকানে হামলা চালান। এ সময় তাঁদের চিৎকারে আশপাশের ও স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। একপর্যায়ে তাঁরা স্থানীয় মানুষের ওপর চড়াও হলে স্থানীয় লোকজনও ধাওয়া দিয়ে দুই ভাইকে ধরে পিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর দোকানপাট বন্ধ করে সবাই চলে যান। একজনের লাশ রাস্তার মাঝখানে, অপরজনের লাশ রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ও সিআইডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, কী কারণে, কারা তাঁদের হত্যা করেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, নিহত দুজন সন্ত্রাসী ছিলেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।