নাচোলে মিশ্র ফলের বাজার
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নাচোল-রহনপুর সড়কের কালইর বাজারের পাশে বসেছে মিশ্র ফলের বাজার। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে বাজারটির উদ্বোধন করেন কসবা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাকারিয়া আল মেহরাব। কালইর ফল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বসেছে এ বাজার।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বাজারে গিয়ে দেখা যায় কার্টিমন, আশ্বিনা ও বারি-১১ জাতের আম, পেয়ারা, মাল্টা, পেঁপে ও ড্রাগন ফলবোঝাই ভটভটির সারি। চলছে বেচাকেনা। বাজার–সংলগ্ন আড়তগুলোয় দেখা যায় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কর্মব্যস্ততা।
ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি ও ফলচাষি আফজাল আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত কার্টিমন ও আশ্বিনা জাতের প্রায় ১০০ মণ, বারি-১১ জাতের প্রায় ১১০ মণ আম, পেয়ারা প্রায় ৪০০ মণ, পেঁপে ৫০ মণ ও ড্রাগন ফল বাজারে বেচাকেনা হয়েছে। প্রথম দিনেই বাজারে বিভিন্ন ফলের এমন আমদানি দেখে তাঁরা আশাবাদী। এখান থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের ফল ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যায়। এখন থেকে তা আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়। বরেন্দ্রভূমির নাচোল এখন ফলের ভান্ডার হয়ে উঠেছে। মাটির গুণে এখানকার আম, মাল্টা ও পেয়ারা অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশি মিষ্টি। তাই চাহিদাও রয়েছে বাইরের ব্যাপারীদের কাছে। এ বাজারের কথা জানতে পেরে প্রথম দিনেই এসেছেন অর্ধশতাধিক ব্যাপারী।
ঢাকা থেকে আসা ব্যাপারী মো. সাকিব বলেন, ‘আগে আমি এই এলাকার বাগানগুলো থেকে আম সংগ্রহ করে ঢাকার উত্তরায় গিয়ে বিক্রি করতাম। বাগানে বাগানে গিয়ে আম সংগ্রহ করা কষ্টের। এখন বাজারে এসে বিভিন্ন জাতের আম কিনেছি। এখনো যে বাজারে বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যায়, এ বাজারে না এলে জানতেই পারতাম না।’
নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালেহ আকরাম বলেন, নাচোলের মোট আবাদি জমির এক–চতুর্থাংশেই, অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার বিঘা জমিতে ফলের বাগান গড়ে উঠেছে। এটা ক্রমে বাড়ছে। এলাকার শিক্ষিত যুবকদের হাত ধরে গড়ে উঠেছে নাচোলের বিরাট ফলের ভান্ডার। একই বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদিত হচ্ছে। মিশ্র ফলের বাজার চালু হওয়ায় এখানকার কৃষি উদ্যোক্তা ও বাইরে থেকে আসা ব্যাপারীরা লাভবান হবেন। বাজারে এসে ব্যাপারীরা চাষিদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে সরাসরি তাঁদের বাগানে গিয়েও ফল কিনতে পারবেন। এ বাজার চাষিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এটা তাঁদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে।