বাবার বিনিময়ে ছেলে এলেন, ধরা দিলেন পুলিশের কাছে

আবদুল মতিন (ডানে) ও তাঁর বাবা আলী হায়দার বকশিছবি: সংগৃহীত।

নোয়াখালী সদর উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি আবদুল মতিনকে (৩৫) ফেরত পেয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবদুল মতিনের বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলী হায়দার বকশিকে আটক করে পুলিশ। এরপর বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে মতিন পুলিশের কাছে ধরা দেন। শর্ত অনুযায়ী, পুলিশও আওয়ামী লীগ নেতা আলী হায়দারকে ছেড়ে দেয়। হামলার ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আটক করা হয়েছে আরও ১৩ জনকে।

সুধারাম থানা-সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের চৌরাস্তা বাজারের একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা আবুদল মতিনকে গ্রেপ্তার করে সুধারাম থানা-পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুর রবের নেতৃত্বে একটি দল। মতিনের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় এলাকায় অনেক প্রভাব রয়েছে। এ কারণে মতিনের ভাই মো. ইসমাইল তাঁর সহযোগীসহ পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মতিনকে ছিনিয়ে নেন।

এ ঘটনার পর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আওয়ামী লীগ নেতা আলী হায়দার বকশিসহ ১৪ জনকে আটক করে। তবে ঘটনার সময় আলী হায়দার ঘটনাস্থলে ছিলেন না। পরবর্তী সময়ে বাবা আলী হায়দারকে ছেড়ে দেওয়ার শর্তে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হন পালিয়ে যাওয়া আসামি আবদুল মতিন। গতকাল রাতে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদের কাছে গিয়ে ধরা দেন। তখন আবদুল ওয়াদুদ তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরপর থানায় আটক মতিনের বাবা আলী হায়দারকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিযান পরিচালনাকারী এএসআই আবদুর রব প্রথম আলোকে বলেন, মতিনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তিনটি মামলাই পল্লীবিদ্যুতের করা মামলা। তিনি তাঁকে গ্রেপ্তার করে অটোরিকশায় তুলতেই তাঁর ভাই ইসমাইলসহ শতাধিক ব্যক্তি অটোরিকশা ঘেরাও করেন। তাঁরা পুলিশের হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেন।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর জাহেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ছিনিয়ে নেওয়া আসামি আবদুল মতিনকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় তাঁদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কারণে তাঁরাও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক মতিনের বাবা আলী হায়দারকে ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ, তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। এ ঘটনায় মোট ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আজ বুধবার দুপুরের দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।