প্রেম করে বিয়ে, পাঁচ মাস পর হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন স্বামী

লাশপ্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে মৌমিতা আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধূর লাশ রেখে পালিয়েছেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। আজ শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্বামীর দাবি, তাঁর স্ত্রী গলায় ফাঁস নিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা জানান, ওই গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল।

নিহত মৌমিতা আক্তার নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ঝাড়ঘরিয়া গ্রামের শাকিব হোসেনের স্ত্রী। মৌমিতা ভোলা সদর উপজেলার মহিউদ্দীনের মেয়ে। মুঠোফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে পরিবারের অমতে পাঁচ মাস আগে শাকিবকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর মৌমিতা তাঁর স্বামীর বাড়িতে থাকতেন। মৌমিতাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভালো চোখে দেখতেন না। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে গালমন্দ করতেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় মৌমিতাকে তাঁর স্বামী শাকিব হোসেন আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। স্বজনেরা চিকিৎসককে জানিয়েছিলেন, মৌমিতা গলায় ফাঁস দিয়েছেন। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৌমিতাকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন শাকিব ও তাঁর পরিবারের লোকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উধাও হয়ে যান।

শাকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সকাল সাড়ে আটটায় কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলাম। আমার ছোট ভাই আমাকে ঘটনাটি জানায়। আমি বাড়ি এসে দেখি ঘরের মেঝেতে আমার স্ত্রী শুয়ে আছে। সে দড়ি না ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়েছিল, আমি বলতে পারব না। পাঁচ মাস আগে আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম।’

কোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, মৌমিতাকে তাঁর স্বামী ও দেবর আক্কেলপুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। মৌমিতা মারা গেছেন। তাঁর বাড়ি ভোলায়। ঘটনাটি তাঁর মা–বাবাকে জানানো হয়েছে। আগামীকাল রোববার সকালে তাঁরা আসবেন বলে জানিয়েছেন।

আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আসিফ আদনান বলেন, ওই গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। তাঁর গলায় দাগ ছিল। ইসিজি করার সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন নার্স গৃহবধূর কাপড়ের মধ্যে একটি চিরকুট পেয়েছেন। চিরকুট গৃহবধূর নিজের হাতে লেখা নাকি অন্য কেউ লিখেছেন, সেটি পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। পুলিশকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। পুলিশ এসে লাশ থানায় নিয়ে গেছে।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু ঘটনাস্থল বদলগাছী থানার মধ্যে পড়েছে, তাই ওই থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। তাঁরা জিডিমুলে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যার জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।