ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে আন্দোলনে হতাহতদের স্মরণ করলেন শিক্ষার্থীরা

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্পাসেছবি: প্রথম আলো

ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করে ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটা থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক-সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল থেকে মিছিল বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন, ডায়েনা চত্বর ও অনুষদ ভবন ঘুরে শহীদ মিনারে গিয়ে সমবেত হয়।

সমবেত হওয়ার পরপরই শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল ‘স্টপ ডিক্টেটরশিপ’, ‘এই ফাগুনে আমরা দ্বিগুণ হচ্ছি, তবে কারাগারে নয় রাজপথে’সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন। আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক, সহসমন্বয়কসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রধান ফটকের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা ছিল।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের স্মৃতিচারণা করেন। আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি আহত ব্যক্তিদের সুস্থতা কামনা করেন। এ ছাড়া ফেস্টুন তৈরি, গ্রাফিতি অঙ্কন, ডিজিটাল পোর্ট্রেট তৈরি করে শহীদদের স্মরণে কনটেন্ট বা লেখা লিখে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনলাইনে প্রচার করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার এ দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরতা ও নারকীয় গণহত্যা চালিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। অনেক শিক্ষার্থী ফেরারি আসামির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের দিনগুলো অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। রাতগুলো হয়ে গেছে গণগ্রেপ্তারের আতঙ্ক। মিথ্যা মামলা দিয়ে অনেকেই অন্যায়ভাবে জেলে আটকে আছেন। বিভিন্ন জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপরও হামলা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘যাঁদের পরিবারের লোকজন মারা গেছেন, তাঁদের আহাজারি কি আপনাদের কানে পৌঁছায় না? শিশুদের পর্যন্ত আপনারা ছাড়েননি। এমন অনেক শিক্ষার্থী মারা গেছেন, তাঁরাই পরবর্তী সময়ে পরিবারের হাল ধরতেন। আমরা এসব অমানবিক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’ বিকেল পাঁচটার দিকে কর্মসূচি শেষ হয়।

এদিকে গতকাল বুধবার পুলিশের বাধা ও ধরপাকড়ের কারণে কুষ্টিয়ায় কোটা সংস্কারপন্থী আন্দোলনকারীদের কর্মসূচি পণ্ড হয়েছিল। এ সময় শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা রাতে তাঁদের ছাড়িয়ে আনেন।