রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তারের পর কারাগারে
রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ওহিদুজ্জামান শেখ (৬৫) সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মূলঘর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।
গত বুধবার দিবাগত রাতে মূলঘর ইউনিয়নের বাঘিয়া গ্রামের বাড়ির কাছ থেকে ওহিদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ীর আদালতে তাঁকে পাঠানো হয়। পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। তবে আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। আজ শুক্রবার সকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান।
পুলিশ জানায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার কাউরিয়া গ্রামের প্রয়াত রাজ্জাক মোল্লার ছেলে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রাজিব মোল্লা বাদী হয়ে গত ৩০ আগস্ট সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, তাঁর ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলী, ইরাদত আলীর ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক কাজী রাকিবুল হোসেন, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সী, রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহম্মদ আলী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুববিষয়ক সম্পাদক অরূপ দত্ত, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীন শেখ, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের ১৭০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় আরও ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৮ জুলাই বেলা তিনটার দিকে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজবাড়ী শহরের বড়পুল এলাকায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উল্লেখিত আসামিরা চারদিক থেকে ঘিরে ধরে অতর্কিতভাবে তাঁদের ওপর হামলা চালান। এ সময় মহিলা দলের নেত্রী সোনিয়া আক্তারসহ শিক্ষার্থী নুরুন্নবী, আশিক ইসলাম, রাজীব মোল্লা, মেহেরাব, আলতাফ মাহমুদ, উৎস সরকার, রিয়াজসহ আন্দোলনকারীদের মারধর করা হয়। পরে আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওসি মাহমুদুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওহিদুজ্জামান শেখকে নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বিকেলে তাঁকে আদালতে পাঠানোর পর রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।