পাট কেটে বাড়িতে ফিরে দেখলেন পুকুরে ভাসছে ছেলের লাশ
সকালে বাড়ির অদূরে পাটখেতে পাট কাটতে গিয়েছিলেন আজিজুল হক ও জরিনা বেগম দম্পতি। বাড়িতেই ছিল তাঁদের পাঁচ সন্তান। দুপুরে পাট কেটে বাড়িতে ফিরে সবার ছোট ছেলে হুসাইনকে (৪) খুঁজছিলেন মা–বাবা। কিন্তু কোথাও পাচ্ছিলেন না। খোঁজাখুঁজির কিছুক্ষণের মধ্যে দেখেন, বাড়ির পাশের পুকুরে হুসাইন ভাসছে। চিৎকার দিয়ে পুকুর থেকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের দানাগছ-মাঝিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া হুসাইন ওই এলাকার ভ্যানচালক আজিজুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৃত শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাতে শালবাহান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজিজুল ও জরিনা দম্পতির চার ছেলে এক মেয়ে। আজ সকালে সন্তানদের বাড়িতে রেখে তাঁরা দুজন বাড়ির অদূরে নিজেদের আবাদ করা পাট কাটতে যান। দুপুরে বাড়িতে ফিরে ছোট ছেলেকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ির পাশের পুকুরে হুসাইনকে ভাসতে দেখে চিৎকার শুরু করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ওই দম্পতির চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুকুর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। বাড়ির বাইরে খেলতে গিয়ে শিশুটি হয়তো কোনোভাবে পুকুরের পানিতে পড়ে তলিয়ে গেছে। মৃত্যুর পর লাশ ভেসে উঠেছে বলে ধারণা স্বজনদের।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজিনুল হক বলেন, ‘শিশুটিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার অন্তত এক ঘণ্টা আগে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ গত রোববার তেঁতুলিয়ার দেবনগর ইউনিয়নে পুকুরের পানিতে ডুবে আমির হোসেন নামের ১৪ মাস বয়সী একটি শিশুর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে চিকিৎসক রাজিনুল হক আরও বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে ছোট ছোট শিশুদের বিষয়ে মা-বাবাদের আরও সচেতন হতে হবে। কাজে বের হওয়ার আগে ছোট শিশুদের অন্তত কারও কাছে রেখে বের হতে হবে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজয় কুমার রায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করা হয়েছে।