ঘরের আড়ায় ঝুলছিল যুবকের লাশ, হাতে গভীর ক্ষত
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় শয়নকক্ষ থেকে মামুন আলী (২৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর হাতে গভীর ক্ষত ছিল। শনিবার দুপুরে কুর্শা ইউনিয়নের মজন্দপাড়া গ্রাম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামুন ওই গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার বিভাগীয় কার্যালয়ে মাস্টাররোলে চাকরি করতেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পেপার কাটার (ছুরি) উদ্ধার করেছে।
থানা-পুলিশ, নিহতের স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার মাস আগে মামুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বনিবনা হচ্ছিল না। কলহের জেরে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী তাঁর বাবার বাড়িতেই থাকতেন। শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে আবার ঘরে যায় মামুন। সকাল সাড়ে আটটা বেজে গেলেও ঘর থেকে বের না হলে তাঁর মা তাঁকে ডাকতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখতে পান। এ সময় দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে দেখেন, আড়ার সঙ্গে ছেলের লাশ ঝুলছে। এ সময় তাঁর চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে গামছা কেটে লাশ নামিয়ে আনেন ও পুলিশকে জানান। এ ছাড়া মামুনের বাঁ হাতে কাটা দাগ দেখতে পান তাঁরা। ঘরের মেঝের এক পাশে রক্তও পড়েছিল। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বেলা দুইটার দিকে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর তাঁর লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নিহতের চাচাতো ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘লাশ নামানোর সময় মামুনের বাঁ হাতের রগ কাটা দেখতে পেয়েছি। এ ছাড়া গলায় জড়ানো গামছা বা অন্য কোথাও কোনো রক্ত দেখতে পাইনি। রক্তের দাগ ছিল ঘরের এক পাশে। ফাঁস নেওয়া ঘরের আড়া ও মেঝের উচ্চতা এবং গামছায় রক্তের কোনো দাগ না দেখে এ মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের পারিবারিক কলহ ছিল। মৃত্যুর খবর জানার পর স্ত্রী একবার দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসী কথা শোনালে চলে যান তিনি।’
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তির বাঁ হাতের কবজিতে জখম ছিল। এ ছাড়া ঘর থেকে একটা কাগজ কাটারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে বাকি তথ্য বলা যাবে।