নির্বাচন খেলার মতো, খেলা শেষে একসঙ্গে চলতে হয়: কাদের সিদ্দিকী
ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক পছন্দ করেন না বলেন মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার হতেয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় পানিতে ডুবে মারা যাওয়া দুই শিশুর পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকেও এ কথা বলেছি। আপনি তো দেশটাতে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন। এমপি ইলেকশন হোক দলীয় প্রতীক দিয়ে, উপজেলাতে হোক মার্কা দিয়ে। তার নিচে কেন যাবেন? এতে চাচার সঙ্গে ভাতিজার, ভাতিজার সঙ্গে ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা লেগে যায়, মনোমালিন্য হয়। কেন এটা করতে গেলেন? উনি (প্রধানমন্ত্রী) স্বীকারও করেছেন—এটা ঠিক হয়নি।’
নিজের এলাকায় রাজনীতির চেয়েও মানুষ তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক উত্থান-পতন আছে। তবে এ অঞ্চলের মানুষ আমার কাছে এক এবং অভিন্ন। তাঁদের নিয়ে আমার কোনো দলাদলি নেই। নির্বাচন হলো একটি খেলার মতো, যতক্ষণ খেলা হয়, দুই দলে বিভক্ত হয়ে খেলতে হয়। খেলা শেষ হলেই পুনরায় একত্রে চলতে হয়।’
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘আমি তো এমন দেশ চাই না। আমি তো এমন দেশের জন্য যুদ্ধ করিনি। আমি সেই দেশ চেয়েছি, যেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষের মধ্যে সম্মানবোধ ছিল। কিন্তু এখন আর সেটি পাওয়া যায় না। এখন বাবাকেই ছেলে সম্মান করে না। অনেক ছেলে বিয়ে করার পর বউকে নিয়ে খায়, অথচ মা-বাবা কী খাইলো তার খোঁজও রাখে না। এটা এখন সমাজের সবচেয়ে বড় ব্যাধি। একটি আইন হচ্ছে, বাবা-মাকে দেখাশোনা না করলে জেল-জরিমানা হবে। মা-বাবা তো রাস্তার ফেলনা জিনিস নয়।’
এ সময় কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন, রাজাবাড়ী ইউনিয়ন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নয়ন উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন খান।
গত শনিবার দুপুরে উপজেলার হতেয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার কামরুল হাসানের মেয়ে মিম ও বাবুল মিয়ার মেয়ে ঝুমা আক্তার নিখোঁজ হয়। পরে রাত ১০টায় বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ওই দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মারা যাওয়া শিশুদের পরিবারের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে আশ্বাস দেন কাদের সিদ্দিকী।