গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় পরাজিত প্রার্থীর কর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতায় যুবক হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা দাবির পক্ষে বিভিন্ন স্লোগানও দেন। পরে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী ঘটনাস্থলে তাঁদের কর্মসূচিতে যোগ দেন। এতে তাঁদের আন্দোলন আরও বেগবান হয়। মহাসড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দূরপাল্লার যানবাহন আটকা পড়ে। ভোগান্তির মধ্যে পড়ে বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রী।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নিহত ওসিকুর ভূঁইয়ার মা জবেদা বেগম বলেন, ‘ওসিকুরের চার মাসের ছেলেকে যারা এতিম করল, তাদের ফাঁসি চাই। এতিম বাচ্চা কীভাবে বাঁচবে। আমার ছেলের খুনিদের পুলিশ গ্রেপ্তার না করলে আমি বাড়িতে ফিরব না।’
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছবেদ আলি ভূঁইয়া। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের চেচানিয়াকান্দিতে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়। কিন্ত হত্যাকাণ্ডের ৩৬ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ জন্য আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দাবি আদায়ের জন্য সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন তাঁরা।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গোপালগঞ্জে সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রদিঘলিয়া বাজারে নির্বাচন–পরবর্তী সহিংসতার সময় গুলিতে মো. ওসিকুর ভূঁইয়া (২৭) নিহত হন। এতে আহত হন আরও পাঁচজন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন কামরুজ্জামান ভূঁইয়া। নিহত ওসিকুর ভূঁইয়া পরাজিত প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলির সমর্থক। গতকাল বাদ আসর নিহত ওসিকুর ভূঁইয়ার জানাজা শেষে চন্দ্রদিঘলিয়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
আজকের কর্মসূচিতে পরাজিত প্রার্থী বি এম লিয়াকত আলি বলেন, ‘নিহত ওসিকুর ভূঁইয়া ছিলেন আমার নির্বাচনী এজেন্ট। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে নৃশংসভাবে হত্যা করে আমার প্রতিপক্ষ। নিহত ওসিকুরের ছোট একটি ছেলে আছে। কী অপরাধ ছিল ওসিকুরের। আজ তাঁর সন্তন এতিম হলো। তাঁর স্ত্রী ও মা-বোনকে কী জবাব দেব? তাই দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ভাইয়ের নির্দেশে আজ আন্দোলন তুলে নিলাম।’