‘আমি আ.লীগে যোগ দিয়েছি, এখন আর কোনো ভয় নেই’
নির্বাচনের মাত্র পাঁচ দিন আগে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সরদার ফুলের তোড়া দিয়ে তাঁকে দলে বরণ করে নেন। এ সময় সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
যোগদান অনুষ্ঠানে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জুলফিকার আলী চৌধুরী আমাকে ওয়ার্ডের কোথাও গণসংযোগ করতে দিচ্ছেন না। যেখানেই গণসংযোগ করতে যাচ্ছি, সেখানেই বাধা পাচ্ছি। আমি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। এ কারণে কেউ আমাকে সহযোগিতাও করছেন না। অনেক আগেই আমার আওয়ামী লীগে যোগদান করার কথা ছিল। সময়-সুযোগের অভাবে যোগদান করতে পারিনি। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। এখন আর আমার কোনো ভয় নেই। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সবাই ভোটে আমার পাশে থাকবে বলে আশা করছি। আমি জয়লাভ করব ইনশা আল্লাহ।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘নজরুল ইসলাম চৌধুরীর দলে যোগদানের মাধ্যমে ক্ষেতলাল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আজ থেকে স্বাধীন হলো। এত দিন ওয়ার্ডটি পরাধীন ছিল। আপনারা সবাই নজরুল ইসলামকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। নজরুল ইসলাম এখন থেকে বীরের বেশে ভোটের গণসংযোগ করবে। যদি কেউ গণসংযোগে তাঁকে বাধা দেন, তাহলে প্রতিহত করা হবে।’
আমি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। এখন আর আমার কোনো ভয় নেই।নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ক্ষেতলাল পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী
নিবার্চনের মাত্র পাঁচ দিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, অনেক আগে থেকেই নজরুল ইসলাম চৌধুরীর আওয়ামী লীগে যোগদানের কথা চলছিল। তবে নানা কারণে সময় ও সুযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, নজরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতিদ্বন্দ্বী জুলফিকার আলী চৌধুরীও আওয়ামী লীগ করেন। তবে দল থেকে নজরুল ইসলামকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। তবে দলের নেতা-কর্মীরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে নজরুল ইসলাম চৌধুরীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী জুলফিকার আলী চৌধুরী বলেন, ‘আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলাম। গত নির্বাচনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে প্যানেল মেয়র হয়েছি। আমি নজরুল ইসলামকে গণসংযোগে বাধা দেইনি। জনপ্রিয়তা না থাকলে দলে যোগদান করিয়ে কোনো ফায়দা হবে না।’
২৭ জুলাই ক্ষেতলাল পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মেয়র পদে প্রথমে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম ওরফে বুলু। এক দিন পর তাঁর দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে ক্ষেতলাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সরদারকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরে সিরাজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম ও নবীউল ইসলাম তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সরদার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন।